পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-প্রথম খণ্ড.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আকবর পরিচালিত হইত। সম্রাট অতি অবাধ্য সৈনিককে শাস্তি দিতে ইতস্ততঃ করিতেন না । পুৰ্ব্বে বেতনের পরিবর্তে সেনাপতিরা জায়গীর লাভ করতেন । এই কুপ্রথা রহিত করিয়া সম্রাট বেতন দিবার প্রথা প্ৰবৰ্ত্তন করেন । এই উপায়ে তিনি সেনাপতিদের বিদ্রোহী হইবার পথে কণ্টক রোপণ করেন। সম্রাট রাজস্ব বিভাগেরও বিশেষ উন্নতি বিধান করেন । এই বিষয়ে বিচক্ষণ হিন্দু রাজস্ব কৰ্ম্মচারী রাজা তোডরমল্ল তাহার প্রধান সহায় ছিলেন । সমস্ত ভূমির পরিমাণ করিয়া তাহা, উত্তম, মধ্যম ও অধম এই তিন ভাগে বিভাগ করিলেন । তাহার গড়পরতা লইয়া, উৎপন্ন শস্তের এক তৃতীয়াংশ, রাজার প্রাপ্য বলিয়। অবধারিত হইত। সেই রাজপ্রাপ্য কর মুদ্রাস্বারা অথবা উৎপন্ন শস্তদ্বারা দিবার নিয়ম ছিল । হিন্দু রাজত্ব কালে উৎপন্ন শস্তের যষ্ঠাংশ রাজ প্রাপ্য ছিল । বলা বাহুল্য কোন কারণে শস্ত নষ্ট হইলে রাজকর হইতে অব্যাহতি পাওয়া যাইত। সম্রাটের এই বিধানে প্রজ। সাধারণের পিশেষ উপকার হইয়াছিল। তিনি রাজ কৰ্ম্মচারী নিয়োগ সম্বন্ধে যথেষ্ট সমদৰ্শিতার পরিচয় দিয়াছেন । ধৰ্ম্ম তাহার কৰ্ম্মচারী নিয়োগের অন্তরীয় কখনও হয় নাই । যে কোন ধৰ্ম্মাবলম্বী উপযুক্ত হইলে উচ্চতর পদ লাভ করিতে সমর্থ জীবনী-কোষ S(tు হইতেন । সেই জন্ত আমরা তাহার সেনাপতি ও সুবাদারের পদে কয়েক জন হিন্দু কৰ্ম্মচারী দেখিতে পাই । র্তাহার রাজ্যশাসন প্রণালীর মধ্যে পারসিক ও ভারতীয় প্রণালীর সংমিশ্রণ ছিল । রাজার মত ও বিশ্বাস সেই সময়ের শাসন প্রণালীর নিয়ামক হইলেও, তিনি কোনও কাজ তাহার বিশ্বস্ত কৰ্ম্মচারীদেরে জিজ্ঞাসা না করিয়া করিতেন না । তিনি উদার, সাম্য ও সমদৰ্শিতার বলে যে সাম্রাজ্য সংঘটন করিয়া গেলেন, তাহার পরবর্তী বংশধরেরা সেই পথ হইতে স্থলিত হইয়া, রাজ্যের পতনের পথ উন্মুক্ত করিয়া দিলেন । আকবর যখন রাজ্যলাভ । করেন, তখন “জোর যার মুলুক তার” এই নীতিরই প্রাবল্য ছিল। পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী পাঠান রাজত্বে আমরা দেখিয়াছি, কোন রাজার মৃত্যুর পরেই, তাহার সিংহাসন অধিকার করিবার জন্য প্রকৃত উত্তরাধকারীদের ও প্রধান কৰ্ম্মচারীদের মধ্যে বিবাদ আরম্ভ হইত। এই নীতি মুঘল রাজত্বে ও অনুস্থত হইয়াছিল। আকবর অতি কঠোরহস্তে এই মূল নীতির মুলচ্ছেদ করিতে প্রয়াসী হইয়াছিলেন। মুঘল শাসকের রাজ্য জয় করিয়া তাহার সুশৃঙ্খল বিধানে তত সমর্থ । ছিলেন না। এই বিষয়ে হিন্দু রাজকৰ্ম্মচারীরা তাহাদিগকে যথেষ্ট সাহায্য করিয়াছেন । রাজ্য জয় করা অপেক্ষা