পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-প্রথম খণ্ড.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Q○ তাহার সুশাসনের ব্যবস্থা করিয়া প্রকৃতি পুঞ্জের মুখ স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি করা অতিশয় কঠিন কাজ । সম্রাট আকবরের চরিত্র— তিনি সম্রাট আওরঙ্গজীবের ন্তায় কঠোর সংযমী ছিলেন না বটে কিন্তু একবারে সংযম বর্জিতও ছিলেন না। তিনি মিতাহারী ও মিতাচারী ছিলেন । তাহার ব্যবহার অতি মধুর ছিল । দীন দরিদ্র প্রজার সামান্ত উপহার দ্রব্য অতি সমাদরে গ্রহণপূৰ্ব্বক বক্ষে ধারণ করিতেন । সকল দিক দিয়া বিচার করিলে, তিনি মুঘল বংশের এক জন শ্রেষ্ঠ রাজা এবং পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রাজাদের মধ্যে একজন শ্রেষ্ঠ নরপতি ছিলেন, ইহাতে কিছু মাত্র সন্দেহ নাই। যোগ্য লোক নিৰ্ব্বাচনে তাহীর আসাধারণ ক্ষমতা ছিল । র্তাহার রাজসভায় ফৈজী, আবুল ফজল, নকিব খ৷ মোল্লা মোহাম্মদ, মোল্লা সাবরি, সুলতান হাজী, হাজী ইব্রাহিম, বদীয়ুনি, বীরবল, তোডর মল্ল, তানসেন প্রভৃতি পণ্ডিত মণ্ডলী বিরাজ করিতেন । সম্রাট আকবরের বিদ্যানুরাগ— যদিও সম্রাট আকবর লেখা পড়া জানিতেন না বলিলেই হয়, তথাপি মানবের জ্ঞানভাণ্ডারের সমস্ত মৰ্ম্ম অবগত হুইবার জন্য র্তাহীর ঐকান্তিক আগ্রহ অতিশয় প্রবল ছিল। অসাধারণ স্মৃতি শক্তির সাহায্যে কাণে শুনিয়া, তিনি ভারতীয়-এতিহাসিক আকবর র্থী যাহা শিখিতেন, সাধারণ লোকের পক্ষে পুস্তক পাঠ করিয়াও তাহা আয়ত্ত করা সম্ভব ছিল না । এই বিদ্যামুরাগের ফলে, র্তাহার রাজ সভায় নানা দেশীয়, নানা বিদ্যায় পারদর্শী বহু জ্ঞানী লোকের সমাবেশ হইয়াছিল । তিনি সাহিত্য, দর্শন ও ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে তর্ক বিতর্ক শুনিতে খুব ভালবাসিতেন এবং নিজেও তাহাতে যোগ দিতেন । শেখ ফৈজি একজন সেই যুগের খ্যাতনামা কবি ছিলেন । তিনি সম্রাটের অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন। তিনি সংস্কৃতেও অসাধারণ পণ্ডিত ছিলেন। তাহার ভ্রাতা আবুল ফজল ও একজন সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত ছিলেন । র্তাহীর গদ্য রচনা অলঙ্কারবহুল হইলেও মার্জিত ও সুরুচিসম্পন্ন ছিল । তাহার রচিত আকবর নাম, আইন-ই-আকবরী, আয়াতুল কুরশী প্রভৃতি গ্রন্থ র্তাহাকে অমর করিয়া রাখিয়াছে। প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক আবদুল কাদের বদামুনী সম্রাটের অন্যতম সভা পণ্ডিত। তারিখ-ই-বদায়ুনী র্তাহার রচিত প্রসিদ্ধ গ্রন্থ । এতদ্ব্যতীত বহু পণ্ডিত র্তাহীর সভা অলঙ্কত করিতেন । সম্রাটের নবরত্ন সভা তাহার নয়জন অন্তরঙ্গ বন্ধুকে লইয় গঠিত হইয়াছিল । তাহাদের মধ্যে রাজা বীরবল, রাজা মানসিংহ, রাজা তোডর মল্ল, হাকিম হুসাম, মোল্লা দুপেয়াজ, শেখ ফৈজী, আবুল ফজল, মির্জা আবদুর রহিম,