পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্ণ [ ৩৯ ] কর্ণ অভিসম্পাত করেন যে মৃত্যু-সমরে পৃথিবী ইহঁর রথচক্র গ্রাস করিবে । একদা পরশুরাম ইহার উরুদেশে মস্তক রক্ষা পূৰ্ব্বক নিদ্রিত হইয়াছিলেন । দংশরূপে অলৰ্ক কর্ণের উরুদেশ ভেদ করিলেও গুরুর নিদ্রাব্যাঘাত ভয়ে তিনি সমুদায় সহ্য করিয়া রহিলেন । পরে রক্তস্পর্শ হেতু পরশুরামের নিদ্রা ভঙ্গ হইলে, তিনি ইহার সহগুণ দেখিয়া ইহাকে ক্ষত্রিয় বলিয়। সন্দেহ করেন। পরে সমুদায় অবগত হইয়া প্রবঞ্চনা হেতু ইহাকে শাপ প্রদান করেন যে মৃত্যু-সময়ে ব্ৰহ্মাস্ত্র সকল স্মরণ থাকিবে না । দুৰ্য্যোধনের সথা ও বিশ্বস্ত মন্ত্রী হইয়া কৰ্ম্ম সুথে কালাতিপাত করিতে লাগিলেন। ইনি পদ্মাবতী নাম্নী কন্যার পাণিগ্রহণ করেন। বুষসেন, স্বরসেন, চিত্ৰসেন, বুষকেতু প্রভৃতি ইহার পুত্র জন্মে। নিজ রাজ্য অঙ্গদেশে (বর্তমান ভাগলপুর) সুচারুরূপে রাজকৰ্ম্ম সম্পাদন করিতেন। ইহার রাজধানীর নাম চম্পা ৷ স্বয়ম্বরস্থল হইতে চিত্রাঙ্গদরাজকন্ত হরণে কৰ্ণ দুর্যোধনকে সাহায্য করেন । এই বিবাদ উপলক্ষে মহাবীর জরাসন্ধের সহিত কর্ণের যুদ্ধ হইলে কর্ণ জয়ী হন। জরাসন্ধ ইহার বীরত্বে সস্তুষ্ট হইয়া মালিনী নগরী ইহাকে প্রদান করেন । গন্ধৰ্ব্ব হস্তে কর্ণের পরাজয় এবং দুৰ্য্যোধনের বন্ধন হইলে, অৰ্জ্জুন গন্ধৰ্ব্বকে পরাজিত করিয়া কুরুরাজকে মুক্ত করেন । তাহাতে দুৰ্য্যোধন নিরতিশয় মৰ্ম্মাহত হইয়। দীন চিত্তে কালযাপন করিতে লাগিলেন । তখন কর্ণ র্তাহার আনন্দ বৰ্দ্ধনার্থ দিগ্বিজয়ে বহির্গত হইয়া বহু দেশ জয় করিয়া বিবিধ রত্নরাজি আনয়ন পূর্বক তাহাকে প্রদান করেন। কথিত আছে যে অর্জুনের উপকারার্থ দেবরাজ ইন্দ্র ব্রাহ্মণবেশে কর্ণের নিকট উপস্থিত হইয়া র্তাহার সহজাত কবচ, ও কুণ্ডলদ্বয় যাজ্ঞা করেন । ইনি সে সকল প্রদান পূৰ্ব্বক তাহার নিকট হইতে একটী অমোঘ শক্তি প্রাপ্ত হন। কর্ণ অতিশয় দাতা ছিলেন এবং কথিত আছে যে ইহার দাতৃত্ব পরীক্ষার্থ কৃষ্ণ বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের বেশে উপস্থিত হইয়া ইহঁার পুত্রের মাংস ভোজন করিতে অভিলাষ প্রকাশ করেন। ব্রাহ্মণের আদেশে কর্ণ ও পদ্মাবতী বৃষকেতুকে হনন করিয়া তাহার মাংস রন্ধন করিলেন । বলা বহুিল্য যে ব্রাহ্মণ তুষ্ট হইলেন, বৃষকেতু পুনর্জীবিত হইলেন, এবং কর্ণ দাতা নামে খ্যাত হইলেন।