পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈতন্যদেব। O

MMMMM করিয়া তিনি সন্ন্যাসী হইবার ইচ্ছা করেন। জননীকে না বলিয়া গৃহত্যাগ করিলে নিশ্চয়ই মাতৃহত্যা-পাপে লিপ্ত হইতে হইবে, এই ভাবিয়া তিনি মাতার নিকট আপনার মনােগত অভিপ্রায় ব্যক্তি করেন। শচী দেবী পুত্রের এই নিদারুণ বাক্য শ্রবণ করিয়া শোকে ত্ৰিয়মাণা হন। নিমাইও ছাড়িবার পাত্ৰ নহেন। শচী দেবী যখন দেখিলেন, নিমাই কোন বাধাই মানিবে না, তখন অগত্যা সম্মত হন। নিমাই সহধৰ্ম্মিণীর নিকটেও সম্মতি লওয়া আবশ্যক বিবেচনা করেন । রজনী সমাগত হইলে, তিনি শয়ন-গৃহে যাইয়া পত্নীর অপেক্ষায় বসিয়া থাকেন।* বিষ্ণুপ্রিয়া দিবাভাগে মাতাপুত্রের সকল কথা শ্রবণ করিয়াছিলেন ; সুতরাং ত্যাহার আর বুঝিতে কিছুই বাকি ছিল না। বিষ্ণুপ্রিয়া ছলছলনেত্ৰে শয়ন-গৃহে প্ৰবেশ করিয়াই দেখেন, স্বামী বসিয়া আছেন। চৈতন্যদেব বিষ্ণুপ্রিয়ার চক্ষে জল দেখিয়া তাহাকে নানা প্রকারে সান্তুনা করিতে থাকেন। পতির মধুর সম্ভাষণে বিষ্ণুপ্রিয়া কিঞ্চিৎ ধৈৰ্য্য অবলম্বন করিয়া বলেন, “নাথ! তুমি নাকি আমাকে ছাড়িয়া সন্ন্যাসী হইবে ? আমি যে তোমাকে পাতি পাইয়া বড় ভাগ্যবতী হইয়াছিলাম। আমার যে কত আশা ছিল। নাথ ! আমি আমার জন্য ভাবিতেছি না, তোমার জন্যই ভাবিতেছি। তুমি কেমন করিয়া এই নবীন বয়সে সন্ন্যাসীর কঠোর দুঃখ বহন করিবে ? তোমার সন্ন্যাসগ্রহণে, তোমার অনাথিনী মাতা নিশ্চয়ই প্ৰাণত্যাগ করিবেন। ধৰ্ম্ম-সাধন করিতে যাইয়া মাতৃহত্যপাপে লিপ্ত হইয়া পড়িবে ? আমাদিগকে এ অবস্থায় পরিত্যাগ করিয়া

  • দিবাভাগে গুরুজন সমক্ষে পত্নীর সহিত কথোপকথন করা ঐ সময়ে অতিশয় নিন্দনীয় ও সমাজ-বিরুদ্ধ ছিল। এখনও কোন কোন গৃহস্থের বাটীতে ঐ নিয়ম প্ৰচলিত আছে।