ধরান। একখানা রূপার থালায় অনেকগুলি চকচকে রূপার টাকা, আর একখানিতে ফুল, জল, ধান্য, খই, মিষ্টান্ন প্রভৃতি। গৃহিণী একটি ফুল তুলে লক্ষ্মীমূর্তির দিকে চেয়ে বল্লেন—লক্ষ্মী আয়ি! স্নানং! নমা।
লক্ষীর একেবারে সাক্ষাৎকরণ হচ্ছে—আসার প্রতীক্ষা মাত্র নয়, একেবারে এসেছেন, ঐ যে দেখা যাচ্ছে! অভ্যাগতের সৎকার হোক। স্নান করাও!
—স্নানং! নমা-নমস্কার!
ইতিমধ্যে ছাদের উপর চাকরের সাহায্যে দীপাবলী সাজিয়ে ঘরে এসে, মা-বাপকে ঘিরেবসা ছেলেমেয়েরা মায়ের ও বাপের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্মীর গায়ে জলসিঞ্চন করে নমস্কার করলে।
তারপর গৃহিণী বল্লেন—লক্ষ্মী আয়ি! পুষ্পং! নমা!
দেবী গৃহগতা! তিনি সাক্ষাতে বিরাজমানা! ছবিতে যেমন স্বামী বা পুত্র সাক্ষাতে বিরাজমান হন তেমনি এই পুতুলে লক্ষ্মী!
সকলে তাঁকে পুষ্প প্রক্ষেপ করে নমস্কার করলেন।
এবার—লক্ষ্মী আয়ি! ধূপং দীপং নমা!
ধুপকাটি জ্বালিয়ে ঘোরান হল, দীপ দেখান হল।
লক্ষ্মী আয়ি! নৈবেদ্যং! নমা।
নৈবেদ্যের থালি তুলে লক্ষ্মীকে আহার্য নিবেদন করা হল, নমস্কার করা হল।
তারপর গৃহপতি—
“ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনং
উর্বারকমিব বন্ধনান্ মৃত্যোর্মোক্ষয়েদামৃতাৎ। ওঁ”
মানে না জেনেই প্রাণপ্রতিষ্ঠার এই সংস্কৃত মন্ত্রটি বল্লেন। তাদের মন্ত্রচৈতন্য বা শব্দার্থ-বোধ অর্থাৎ সম্মুখস্থ লক্ষ্মী-মূর্তিকে অন্তরে অনুভব হয়ে গেছে এবং ভাবের গাঢ়তায় তাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠাও করে ফেলেছেন তা জানেন না। শেষকালে সপরিবারে “জয় জগদীশ হরে” এই আরতির গানটি গেয়ে পূজা সমাপন হল। গৃহিণী নিজের মনে খানিকক্ষণ লক্ষ্মীকে ধ্যান করলেন। আসন ছেড়ে উঠবার আগে আমাকে ধরলেন—“একটি কিছু মন্ত্র আপনিও বলুন। আমার একটি জানা ছিল, আমি সেইটি বল্লুম ও মানে বুঝিয়ে দিলুম —
ওঁ ত্রৈলোক্যমাতরং হ্রীং শ্রীং স্বাহা!
“যিনি ত্রিলোকের মা, ত্রিলোককে অন্ন দেন, বল দেন, পুষ্টি দেন—