পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।


পুষ্পমাসে গন্ধ-বহ যদি আনে
 মোহ অভিনব,
নিদাঘ সন্ধ্যায় উঠে বেণুবীণা রব,
ময়ূরবিরুতমধু, বনভূবচ্ছায়,
পুলকসমুত্থ কল্প যদি শিহরায়,
 রবে অকম্পিতা তুমি!
 হে আত্ম-ঈশানা
 চির-অতৃষাণা!


যদি ঝড়ঝঞ্জা উঠে, বক্ষ-মাঝে
 অঞ্চল আবরি,
অগ্নি রাখি দিও, জাগি সারা বিভাবরী!
আর সব নারী ভবে প্রিয়-পরিজনা,
তুমি রহ শ্রেয়োনিষ্ঠ ব্রত-পরায়ণা!
অনাকুলা, অনলসা, সুকঠোরজপা!
 দৃঢ়পরন্তপা!

 এই সময় রুশের সঙ্গে জাপানের যুদ্ধ বাধল। বাঙালীদের মনুষ্যত্বের পথে আর এক ডিগ্রি উঠানর জন্যে এই সুযোগটা গ্রহণপরায়ণ হলুম। খবরের কাগজে একটি বিজ্ঞপ্তি দিলুম, ইংরেজদের রেডক্রসের মত বাঙালীদেরও একটি রেডক্রস দল গঠনের জন্যে আমি সচেষ্ট—জাপানের যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে আহতদের সেবার জন্যে। যাঁরা যোগ দিতে চান নিজেদের নাম ধাম আমার কাছে পাঠাবেন; এবং এর ব্যয় নির্বাহার্থে দশ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে, যাঁরা অর্থ সাহায্য করতে চান তাঁদের সাহায্য সাদরে গৃহীত হবে। এর উত্তরে তিন শ-র অধিক লোকের আবেদন এল ‘বেঙ্গলী রেডক্রস’ দলভুক্ত হবার জন্যে; এবং অর্থের দিক থেকে সর্ব প্রথমে মৌরভঞ্জের মহারাজা শ্রীরামচন্দ্র ভঞ্জ অযাচিতভাবে একখানি এক হাজার টাকার চেক পাঠালেন। ময়মনসিংহের মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য এবং অন্যান্য বন্ধু-বান্ধবেরা জানালেন তাঁরা প্রস্তুত আছেন, যখনি যত টাকার প্রয়োজন জানালে পাঠিয়ে দেবেন। দেখলুম, দেশে প্রাণের অভাব নেই, খালি জ্বালিয়ে দেবার দেশলাই কাঠি একটি চাই। এই সময় বেলুচিস্থান থেকে Colonel Yates নামে একজন ইংরেজ মিলিটারী অফিসারের একখানি চিঠি পেলুম। তিনি অনুযোগ করলেন, আমি বাঙালীদের একটা স্বতন্ত্র Ambulance Corps ম্যাঞ্চুরিয়ায় পাঠাবার

১৪৬