পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একটি সুর ধরে শুনিয়ে দিলেন। বৈকু রাজার গল্পচ্ছলে গুরুকে শ্রদ্ধায় সর্বষ অর্পণ করার কথাটা কানে তুলে দিলেন।

 “আমি গুরুবরণের জন্য যাইনি। শুধু যতীনবাবুর কথায় প্রখ্যাত বিজয় চাটুজ্যের উপনিষদের রসাত্মক ব্যাখ্যান শোনবার প্রলোভনে গিয়েছিলাম, যদি আমার বাড়ির স্মধ্যায়মণ্ডলীতে উপনিষদতত্ত্ব শোনাতে মাসে এক-আধবার আমায় কৃপা করেন। একটা সিংহকে ধরতে গিয়েছিলাম—নিজে বাঁধা পড়ে গেলুম।...

 “বাড়ি ফিরে একটা ভাব মনের ভিতর আলোড়ন করতে থাকল। সেটা দুদিন পরে কবিতাকারে ফুটলো। যাঁকে উপদেষ্টা বলে, জ্ঞানী বলে শরণ নিয়েছি, যাঁর উপদেশ শুনতে আনাগোনা করছি, তাঁকে একে- বারে ‘গুরু' বলে কবুল সম্বোধনের সঙ্কোচ ধুলিসাৎ করলম এত দিনে। দৃঢ়ভূমি, বদ্ধভূমি, বদ্ধমূল সংস্কারের এক একটা প্রাচীর অতি কষ্টে, অতি অনিচ্ছায় যেন একে একে পড়ে যেতে লাগল।...সে কবিতাটি এইঃ

“গাত্রান্তর

গুরো!

চৈতন্যে কর সম্প্রদান।
গোত্রান্তর কর মোরে
হে মঙ্গলনিদান।

জন্ম যার ঘোর মৃত্যুগৃহে,
নিরানন্দের কূলে,
অমৃত-পাত্রস্থ কর তারে,
দাও আনন্দ-গোত্রে তুলে।
ভয়েতে বিমূঢ় যেই চমকায়
প্রতি বায়ুহিল্লোলে,
স’পো তারে ভয়ানা ভয়ে,
অন্তর গোত্রে যাক সেই চলে।

নাহি যার শক্তি সাধ্য লেশ,
অন্তর শক্তির সনে
বাঁধ তার দক্ষিণ পাণি,
শক্তি গোত্র হোক শুভখনে!

২০৫