পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তিনি শুনে বললেন-By Jove! কথা বুঝি না বুঝি তোমার গাওয়া শুনে বুঝছি কি তুমুল আলোড়ন আনতে পারে মনে। আমার স্বামীর দিকে ফিরে বললেন—“আমি যদি Bengal Government হতুম তোমার স্ত্রীর বিরদ্ধে externment order জারী করতুম, যাতে আর কখনো বাঙলায় গিয়ে বাঙালীদের মাতিয়ে তুলতে না পারে।”

 আমি ছাড়াও মাতাবার আরো অনেক লোকের জন্ম হল। বাঙলায় গায়িকার বন্যা এল। আলমোড়া পাহাড়ের উপর বিবেকানন্দ আশ্রমের অধিনেত্রী মিসেস সেভিয়র একবার বলেছিলেন—আর কিছু না, শুধু যদি জাতীয় গান গেয়ে গেয়ে ফেরো তুমি ভারতের নগরে নগরে গ্রামে গ্রামে সমগ্র দেশকে মাতাতে পার। সে কথাটা আমার মনে লেগেছিল। অনেক সময় ভেবেছিলুম, একটি চারণ-দল গড়ে ঘুরে ঘুরে গেয়ে গেয়ে দেশকে জাগ্রত করব। কিন্তু তার জন্যেও আমার অপেক্ষায় দেশ বসে থাকেনি। সে কাজ আপনা-আপনি হয়ে উঠেছে।

 সঙ্গীত-ক্ষেত্রে উপস্থিত হওয়ার সাময়িক প্রাথমিকতায় আমার গান ঘরে ঘরে লোকের মনে আসন পেয়েছে, তাদের আনন্দ দিয়েছে। কণ্ঠগুণের প্রাথমিকতায় নয়। আজ যদি এ কালের মেয়েদের সঙ্গে পরীক্ষায় নামতে হত কলকে পেতুম না। আমার দ্বারা যা কাজ নেবার তা দেশের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা নিয়ে নিয়েছেন। এখন পালা এসেছে আধুনিক মেয়েদের।

বার

স্থলে জলে

স্কুলের বন্ধু মেয়েদের মধ্যে দুচারজনের আমাদের বাড়িতে এসে মধ্যে মধ্যে থাকার কথা বলেছি। আমরা কিন্তু কোথাও গিয়ে থাকবার অনুমতি পেতুম না—একটি বাড়িতে ছাড়া—সে খুসীর পিতৃগৃহ দুর্গামোহন দাসের বাড়ি। তখন তাঁর সাহেবীপাড়ায় রডন স্ট্রীটে একটা প্রকাণ্ড তিনতলা বাড়ির উপরতলায় থাকতেন। স্বামী ও কন্যাগণসহ খুসীর বড়দিদি সরলা রায়—ডাক্তার পি কে রায়ের পত্নী—ঐ বাড়ির মাঝতলায় থাকেন। খুসীর মেজদিদি অবলা দাসের জগদীশ বসুর সঙ্গে বিয়ে হয়ে

৮২