পাতা:জীবন-স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৩৪৮).pdf/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৮
জীবন-স্মৃতি

“খাঁচার মাঝে অচিন পাখি কমনে আসে যায়
ধরতে পারলে মনােবেড়ি দিতেম পাখির পায়।”

দেখিলাম বাউলের গানও ঠিক ওই একই কথা বলিতেছে। মাঝে মাঝে বদ্ধ খাঁচার মধ্যে আসিয়া অচিন পাখি বন্ধনহীন অচেনার কথা বলিয়া যায়—মন তাহাকে চিরন্তন করিয়া ধরিয়া রাখিতে চায় কিন্তু পারে না। এই অচিন পাখির নিঃশব্দ যাওয়াআসার খবর গানের সুর ছাড়া আর কে দিতে পারে!

 এই কারণে চিরকাল গানের বই ছাপাইতে সংকোচ বােধ করি। কেননা গানের বহিতে আসল জিনিসই বাদ পড়িয়া যায়। সংগীত বাদ দিয়া সংগীতের বাহনগুলিকে সাজাইয়া রাখিলে কেমন হয় যেমন গণপতিকে বাদ দিয়া তাহার মূষিকটাকে ধরিয়া রাখা।


গঙ্গাতীর

 বিলাতযাত্রার আরম্ভ পথ হইতে যখন ফিরিয়া আসিলাম তখন জ্যোতিদাদা চন্দননগরে গঙ্গাধারের বাগানে বাস করিতেছিলেন—আমি তাঁহাদের আশ্রয় গ্রহণ করিলাম। আবার সেই গঙ্গা! সেই আলস্যে আনন্দে অনির্বচনীয়, বিষাদে ও ব্যাকুলতায় জড়িত, স্নিগ্ধ শ্যামল নদীতীরের সেই