পাতা:জীবন বীমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
দারোগার দপ্তর, ১৬৩ সংখ্যা।

তাহা পাঠ করিলাম। উহাতে লেখা ছিল,—বয়ঃক্রম চল্লিশ বৎসর, আকৃতি খর্ব্ব, বাম চক্ষুটি দক্ষিণ, চক্ষু অপেক্ষা অতি সামান্য ছোট বলিয়া অনুমান হয়।

 আমার কথা শুনিয়া জমিদার মহাশয় আমাকে কহিলেন, “আপনি এখন নিজ স্থানে প্রস্থান করুন; আমার বোধ হইতেছে, আপনার কার্য্য সফল হইতে আর অধিক বিলম্ব নাই। কল্য প্রত্যুষেই আমি আপনার বাসায় গিয়া আপনার সহিত সাক্ষাৎ করিব ও আমি যাহা জানিতে পারিব, তৎসমস্তই আপনাকে বলিয়া আসিব। ইহার মধ্যে আরও একটু কাজ করিয়া রাখিবেন। যে যে ব্যক্তি হরেকৃষ্ণকে ইতিপূর্বে দেখিয়াছে, বীমা অফিসের লোকই হউন, ডাক্তারই হউন বা অপর কোন ব্যক্তিই হউন, তাহাদিগের নিকট হইতে উহার আকৃতি কিরূপ, তাহার বর্ণন যতদূর সম্ভব সংগ্রহ করিয়া রাখিবেন।”

 জমিদারের কথা শুনিয়া আমি সেই স্থানে আর অধিকক্ষণ বিলম্ব করিলাম না। সেই স্থান হইতে বহির্গত হইয়া তিনি যে বিষয়টা আমাকে সংগ্রহ করিতে বলিয়াছিলেন, তাহা যতদূর সম্ভব সংগ্রহ করিয়া, আমি আমার বাসায় প্রত্যাগমন করিলাম।

 জমিদার মহাশয় আমাকে যেটুকু আভাস প্রদান করিলেন, তাহাতে একবার আমার মনে হইল, ব্রজবন্ধুর এই কার্য্যে জুয়াচুরি আছে ও যাহা দ্বারা এই জুয়াচুরি হইয়াছে, তাহা জমিদার মহাশয় বুঝিতে পারিয়াছেন। আবার ভাবিলাম, এ বিষয়ে ব্রজবন্ধু হয় তো সম্পূর্ণরূপে নির্দোষী। জমিদার মহাশয় হয় তো, এই সুযোগে তাঁহার জমিদারি বুদ্ধি খাটাইয়া আমাদিগের সাহায্যে তাঁহার চির শত্রুকে ভয়ানকরূপে বিপদগ্রস্ত করিতে প্রবৃত্ত হইবেন