পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেওয়া মীমাংসায় । কিন্তু জমিদারের ছেলে-ঘটিত এ ব্যাপাৱে প্ৰকাশ্য মজলিস অসম্ভব। কে ঘাটতে যাবে বিষয়টা, কে ঘোষণা করবে। যে সে জানে কি ঘটেছিল, সঙ্গতি-অসঙ্গতির প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা তো দূরের কথা। হাটে মাঠে ঘরের দাওয়ায় দু-চারজনের মধ্যে সাবধানে ঘরোয় আলাপ আলোচনাই চলে। সেই গুজবেই মুখরিত হয়ে থাকে আটুলির্গা। জ্ঞানদাস আপসোস করে বলে, আগে একটু পরামর্শ করলি না পাচু! কি পরামর্শ? ঘরে ডাকাত পড়েছে তার পরামর্শ কি ? মেয়ে নিয়ে কাণ্ড, এ বড় ঝকমারি কাজ। লোকে এগোয় না মোটে, সায় দেয় না। খাজনা বন্ধের ব্যাপারে দ্ব্যাখ, বুক ঠুকে সব ঘাড় তুলে দাড়িয়েছিল। এতে মন করবে। কি, নোংরা ব্যাপার ওতে গিয়ে মোর কাজ নাই। ঠেঙিয়েছিস আচ্ছা করেছিস, ওর বাপ শালাকেও ঠেঙানো দরকার। তা ঠেঙালেই তো হয় না, আঁাটঘাট বঁধতে হয় আগে । কি আঁটাঘাট বান্ধব ? পাড়ায় গায়ে ঘোট পাকাতি আগে যে সবাই দ্যাখো গরীবের পরে কি অত্যাচার। বাবুদের ছেলে জবরদস্তি মেয়েছেলের ধৰ্ম্ম নষ্ট করেছে। দু-চারজন ভদৱলোককে মধ্যস্থ মানতি । তাতেই ভড়কে যেত বজাতটা, মিটে যেত ব্যাপার। তবু যদি আসত জোর খাটাতে, তখন পিটিয়ে দিতি । ব্যাপার হত কি, আগে থেকে হৈ চৈ করা থাকলে দশজনকে পিছনে পাওয়া যেত । রাগ হত সবার। খুব সহজ রাজনীতি। পাঁচুও বোঝে । কিন্তু বাশবনে দুকলি তাকে রাজনীতি ভুলিয়ে দিয়েছে। আগে ঘোট পাকালে হেমন্ত যদি ভড়কে গিয়ে পিছিয়ে যেত, তাকে আঘাত করার, ঘাড় ধরে তাকে উঠানে নাকে খাত দেওয়ানোর সুযোগও তাহলে যে ফসকে যেত! আগে পাচু জানত না, দুকলি নিজ জানিয়ে দিয়েছে সে সত্যই কত ভাল, কত ভীরু, কত অসহায়। টাকার জোরে বা গায়ের জোরে হোক, দুকলিদের নিয়ে যারা খেলা করে তাদের মত পাষণ্ড জগতে নেই। পাচুর আগের হিসাব পালটে গেছে। স্বেচ্ছায় খুশি হয়েও যদি কোনো দুকলি কোনো হেমন্তের সঙ্গে ভাব করে, পাচু তাকে এতটুকু 88ዓ