পাতা:জেলের খাতা - বিপিনচন্দ্র পাল.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বিতীয় চিন্তা

প্রথম অধ্যায়

প্রাণের কথা

 প্রাণং দেবা অনুপ্রাণস্তি। মানুষ্যঃ পশবশ্চ যে। প্রণো হি ভূতা নামাযুঃ। তস্মাৎ সর্ব্বায়ূষমুচ্যতে।

 সর্ব্বমেব ত আয়ুর্যন্তি। যে প্রাণংব্রহ্মোপাসতে।[১]

 শুনিয়াছি, বয়স হইলে, লোকের প্রাণের মায়া কমিয়া আসে। যার কমে না, সে অধম, ঘোর সংসারী। বয়সের সঙ্গে আমার কিন্তু প্রাণের মমতা কমে নাই, বরং বাড়িয়াই বুঝি চলিয়াছে। এ জন্য আমাক অধম বলিতে হয়, বল। অধম যে নই, স্পদ্ধা করিয়া এমন কথাও বলিতে পারি না। তোমরা অধম আমায় বলিলে, গায়ে বড় লাগে সত্য, যেন তপ্ত তৈলের ছিটা পড়ে, মন প্রাণ তাতে চিড়বিড় করিয়া উঠে। তোমরা আমার আপনার জন নও, তাতেই বুঝি অমন হয়। আবার অধম বলিয়া তোমাদের আনন্দ হয়, তোমাদের অভিমান পুষ্ট হয়, তাই তাতে আমার অভিমানে এমন আঘাত লাগে। কিন্তু আমি নিজেকে অধম বলিয়া জানি বা না জানি, অনেক সময় ভাবিয়া থাকি। আামার নিজের মুখে যখন আমি নিজেকে অধম বলি, তখন প্রণে আরাম পাই। নিজেকে নিজে নীচু করার একটা মহত্ব আছে, তারই জন্য আপনাকে অধম বলিয়া মানাতে আামি কুণ্ঠিত নহি। অধম যে নই, -এমন কথা তাই বলিতে চাহি না। কিন্তু প্রাণকে ভালবাসি এই জন্য আমি অধম, এ কথা তোমরা

  1. তৈত্তিরীয়োপনিষত্‌ ব্রহ্মানন্দবল্লী