হইল। রমণী যুবতী এবং সত্যই অনিন্দ্যসুন্দরী। কিরূপে কোন্ সময়ে এই কাণ্ড ঘটিল জিজ্ঞাসা করায়, ইন্সপেক্টরবাবু উত্তর করিলেন, “বেগ ছয়টার সময় একখানি ভাড়াটীয়া গাড়ী চিৎপুর রোড দিয়া উত্তর মুখে যাইতেছিল। গাড়ীখানি কিছু আস্তে আস্তেই যাইতেছিল। ঠিক সেই সময়ে একখানি টামগাড়ী অতি দ্রুতবেগে দক্ষিণ দিক হইতে উত্তর দিকে যাইতেছিল। টমখানি যখন কিছুদূর দক্ষিণে ছিল, সেই সময়ে সহসা সেই ভাড়াটীয়া গাড়ীর দরজা খুলিয়া গেল এবং নিমেষ মধ্যে ঐ সুন্দরী রমণী যেন গতিশীল উমের সম্মুখে নিক্ষিপ্ত হইল। ট্রামখানি সাত আটহাত দূরে ছিল, কিন্তু চালক অত্যন্ত বিচক্ষণ থাকায় সে একেবারে গাড়ীর গতিরোধ করিল। সকলেই ভাবিয়াছিল, রমণী বাঁচিয়া গেল। কিন্তু যেরূপ বলে সে নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল, তাহাতে তাহাকে আর কেহ জীবিত অবস্থায় দেখিতে পায় নাই। পতন গাত্রেই তাহার মৃত্যু হইয়াছিল। ইত্যবসরে পথে লোকে লোকারণ্য হইয়া গেল; এবং সেই ভাড়াটীয়া গাড়ীর ভিতর হইতে এক যুবক সহসা সকলের অগোচরে কোথায় যে পলায়ন করিল, তাহা কেহই বলিতে পারিল না। ভাড়াটায়া গাড়িখানি অগত্যা ধৃত হইয়া থানায় আনীত হইয়াছে। টামগাড়ীর নম্বর এবং কণ্ডাক্টর ও চালকের নাম ও নম্বর সমস্তই লিখিত আছে। প্রয়োজন হইলেই তাহারা আসিয়া হাজির হইবে।”
ইন্সপেক্টারবাবুর কথা শুনিয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,“কে সেই ভাড়াটা গাড়ীর ভিতর ছিল, তাহা কি জানিতে পারিয়াছেন? এত লোকের চক্ষে ধূলি দিয়া সে কেমন করিয়া পলায়ন করি বলিতে পারেন?”