পাতা:জ্ঞানযোগ - চতুর্থ সংস্করণ.pdf/৪০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্ঞানযোগ । বুঝিবার উপযুক্ত একটা দার্শনিক ধারণা করিবার জন্ত আমরা দেহ, মন, আত্মা প্রভৃতি নানা ভেদ করিয়া থাকি, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এক সত্তাই বিরাজিত । সেই এক বস্তুই নানারূপে প্রতিভাত হইতেছে । অদ্বৈতবাদীদের চিরপরিচিত উপমা অনুসারে বলিতে গেলে বলিতে হয়, রজুই সপাকারে প্রতিভাত হইতেছে । অন্ধকারবশতঃ অথবা অন্ত কোন কারণে অনেকে রজ্জ্বকে সৰ্প বলিয়া ভ্ৰম করিয়া থাকেন, কিন্তু জ্ঞানের উদয় হইলে সর্পভ্রম ঘুচিয়া যায়, আর উহাকে রজ্জ্ব বলিয়া বোধ হয়। এই উদাহরণের দ্বারা জামরা বেশ বুঝিতেছি যে, মনে যখন সৰ্পজ্ঞান থাকে, তখন রজ্জ্বজ্ঞান চলিয়া যায়, আবার যখন রজ্জ্বজ্ঞানের উদয় হয়, তখন সৰ্পজ্ঞান চলিয়া যায়। যখন আমরা ব্যবহারিক সত্তা দেখি, তখন পারমার্থিক সত্তা থাকে না, আবার যখন আমরা সেই অপরিণামী পারমার্থিক সত্তা দেখি, তখন অবশুই ব্যবহারিক সত্তা আর প্রতিভাত হয় না। এক্ষণে আমরা প্রত্যক্ষবাদী ও বিজ্ঞানবাদী ( Idealist ) উভয়েরই মত বেশ পরিষ্কার বুঝিতেছি। প্রত্যক্ষবাদী কেবল ব্যবহারিক সত্তা দেখেন আর বিজ্ঞানবাদী পারমার্থিক সত্তার দিকে দেখিতে চেষ্টা করেন। প্রকৃত বিজ্ঞানবাদী, যিনি অপরিণামী সত্তাকে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন, তাহার পক্ষে পরিণামশীল জগৎ আর থাকে না ; তাহারই কেবল বলিবার অধিকার আছে যে, জগৎ সমস্তই মিথ্যাঁ, পরিণাম বলিয়া কিছুই নাই। প্রত্যক্ষবাদী কিন্তু পরিণামের দিকেই লক্ষ্য করিয়া থাকেন। তাহার পক্ষে অপরিণামী সত্তা উড়িয় গিয়াছে, সুতরাং তাহার জগৎ সত্য বলিবার অধিকার আছে। - 8 os