>x“ তোমার পরামশের বিপরীত আচরণ করিতাম না। আমার অদৃষ্ট ভাল হইলে তুমিই বা কেন আমাকে ত্যাগ করিবে ? কিন্তু গিরিবালা যদি তোমার চক্ষু এরূপ হইত তাহ হইলে আমি কখন তোমাকে অনাদর করিতুমি না । কখন তোমাকে ত্যাগ করিয়া অপর কাহাকে বিবাহ করিতাম না । গিরিবালা তোমার চক্ষু আছে বটে কিন্তু তুমি আমার অন্তঃকরণ দেখিতে পাইতেছ না । আমি যে তোমাকে কত ভাল বাসি, তোমা বিনে যে আমার দেহে প্রাণ থাকিবে না তাহা তুমি টের পাইতেছ না। তুমি বলিবে ‘ কানার ভাল বাসায় আমার কাজ কি ? ? সত্য ; কিন্তু গিরিবালা তোমার অন্তঃকরণ যে মৃণাল অপেক্ষাও কোমল তাহা তো আমি জানি । আমার ভালবাসার জন্য না হউক আমার অন্তঃকরণের কষ্ট একবার দেখিতে পাইলে তুমি আমাকে কখন পরিত্যাগ করিতে পারিতে না । নিতান্ত পর হইলেও তুমি তাহার কষ্ট সহ্য করিতে পার না । আমার কষ্ট ললিত-সৌদামিনী । (জ্ঞানীকুর মাঃ, ১২৮২
- আমারি ? বলিয়া ডাক । তাহা হইলে আমার সকল দুঃখ দূর হইবে।”
এতদূর প্রকাশে বলিয়া কেশব চুপ করিলেন । গিরিবালার চক্ষে বারি বছিতে লাগিল । কিন্তু তিনি প্রকাশ করিয়া কিছুই বলিলেন না । দশম পরিচ্ছেদ । সৌদামিনীর বিবাহের দিনস্থির হইয়াছে । বামনদাস আনন্দ সলিলে ভাসিতেছেন। রামকানাই দুঃখার্ণবে হাবুডুবু খাইতেছেন। বামনদাসের উপর তাহার যার পর নাই রাগ হুই য়াছে । মনে মনে ভাবিতেছেন “ বামনদাসকে সেই ধন্ন দিতে হইল, তবে কিঞ্চিৎ আগে দিলেই হইত, তাহা হইলে আর আমার ক্ষতি হইত না ।” দিগম্বর সমস্ত দিবস বিবাহের উদ্যোগে ব্যস্ত আছেন ; ভগিনীপতির সহিত বসিয়া গণপ করিবার অবকাশ নাই । ক্রমে সমস্ত উদ্যোগ হইল ; কল্য রাত্রে বিবাহ। রামকানাইয়ের পূর্ব রাত্রি নিদ্রা হইল না। সৌদামিনী লাভ হ যে তোমার বরদস্ত হইত তাহা কখনইe ইবে ভাবিয়া তাহার চিত্ত আনন্দে সম্ভব হইতে পারে না । গিরিবালা এখনও ফের। তুমি যাহা করিয়াছ তা করিয়াছ, আর আমাকে ত্যাগ করিও না । সহস্ৰ দোষে দোষী হইলেও গিরিবাল তুমি আমারি। একবার তুমি আমাকে এইরূপ আদর করিয়া আমাকে উচ্ছলিত হইতে লাগিল, কিন্তু কিছু পণ পাইবেন না ভাবিয়া আবার যার পর নাই দুঃখিত হইতে লাগিলেন । বামনদাসের উপরেই তাহার রাগ,— তিনি কেন কিঞ্চিৎ আগ্ৰে ধৰ্মা দিলেন না, এই তাহার দোষ ।
