পাতা:জ্ঞানাঙ্কুর ও প্রতিবিম্ব - চতুর্থ খণ্ড.pdf/২৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨86’ ভূত্য “যে আজ্ঞা" বলিয়া প্রস্থান করিল । তৃতীয় পরিচ্ছেদ। বিদেশিনী । ক্ষণ বিলম্বেই অপরিচিত আননদময়ীর কক্ষে প্রবেশ করিল। তাছাকে দেখিবা মাত্র আনন্দময়ীর মুখ শুষ্ক হইল, এবং সমস্ত শরীর যেন পাণ্ডবর্ণ হইয়া গেল। তখন যদি কেহ র্তাহার বক্ষস্থলে হস্ত বিন্যাস করিয়া দেখিত, তবে সে জানিতে পারিত যে, তাহার হৃদয় কাপিতেছে । যাহা হউক তিনি কথঞ্চিৎ সাহস সংগ্ৰহ করিয়া জিজ্ঞাসিলেন, — “তুমিই কি আমার নিকট আসিয়াছ ? তোমার প্রয়োজন কি ?” অপরিচিতার মুখঐ দর্শনে বোধ হইতে লাগিল যেন দারিদ্র্যদুঃখ তাহার সহিত বহুকাল একত্র বাস করিতেছে। অপরিচিত আনন্দময়ীর প্রতি স্বীয় কোটর গত লোচনের স্থির দৃষ্টি স্থাপিত করিয়া কছিল,— “দেবি ! আমি আমার পুত্ব দেখিতে অগসিয়াছি।” অননদময়ী চমকিত হইয়া কছিলেন, “পুত্ৰ দেখিতে আসিয়াছি কেমন ! কোথায় তোমার পুত্ৰ ? অপরিচিত কহিল,— “আপনার নিকটেই আমার পুত্ৰ আছে । শশিশেখর আপনার পুত্র খ্রীপঞ্চমী । | {জ্ঞানfকুর বৈঃ, ১২৮৩ নয়, আমার পুত্র । আমি তাহাকে দশমাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করেছিলেম। আমার নাম মন্দাকিনী । এই গ্রামেই আমার বাপের বাড়ী ছিল, এখন আর সে ভিটাও নাই।” মন্দাকিনী সাহস সহকারে এবং অতি গম্ভীর ভাবে যতক্ষণ এই কথা গুলি বলিতেছিল, আনন্দময়ী দেবী ততক্ষণ নিতান্ত বিম্মিত ভাবে তাহার মুখের প্রতি স্থির দৃষ্টি রাখিয়াছিলেন। কিন্তু সে দৃষ্টি নিতান্ত উৎসাহ শূন্য ও নিস্তেজ । সে সময় তাহাকে কেহ দেখিয়া নিশ্চয়ই অনুমান করিতে পারিত, যে অপরিচিতার এই কথাগুলি তাহার হৃদয় পর্য্যস্ত ভেদ করিতেছিল । আনন্দময়ী “হা ভগবান’ বলিয়া একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিলেন। শেষে করকপোল সংলগ্ন হইয়া অপনা আপনি কহিতে লাগিলেন,— “ছায় ! এক জনের পাপে অমাকে চিরজীবন পুড়িয়া মরিতে হইল। অবশেষে বোধ হয় ইহা সকল লোকে জানিতে পারিয়া অামাকে যার পর নাই অপমানিত করবে। উঃ! অদৃষ্টে কি আছে কিছুই বলিতে পারি না।” আবার ক্ষণকাল কি ভাবিলেন —ভাবিয়া যেন ক্রোধে উত্তেজিত হইয়া দাড়াইলেন, কিন্তু অপরিচিতা মন্দাকিনীর মুখের প্রতি দৃষ্টি করিয়াই