পাতা:জ্ঞানাঙ্কুর ও প্রতিবিম্ব - চতুর্থ খণ্ড.pdf/৩৩৫

— বিবেচনা করিয়া করিবে । দুৰ্জ্জনকে পরীহার, বিজ্ঞের পরামর্শ । তুমি ও দিকে যথাবিছিত যত্ন ও চেষ্টা কর ; আমিও একবার বরদাকান্তের নিকট যাইব । যদিও তিনি বিন্দু মাত্র সৎস্বভাবান্বিত নহেন, তথাপি তিনি প্রবীণ ! আমি জানি, তিনি সমস্তই জানিয়াছেন এবং তিনিই পুত্রের সমস্ত সুফিয়ার উৎসাহ দাতা–তথাপি একবার তাহাকে অনুরোধ করা ভtল ।” & যোগেশ সোৎসাহে কছিলেন,— “তবে আমি অদ্যই প্রস্থান করি।” গঙ্গাগোবিন্দ সম্মতি জ্ঞাপন করিলেন । বাহুকাদি সমস্ত প্রস্তুত হইল । যোগেশ খুল্লতাত প্রভৃতির নিকট হইতে বিদায় গ্রহণ করিয়া রামনগরাভিমুখে প্রস্থান করিলেন । সন্ধ্যার অব্যবহিত কাল পরে বাহকেরা উভয় গ্রামের মধ্যবর্তী এক প্রাস্তুর পাশ্ব স্থ বৃক্ষ মুলে পালকী নামাইয়া হস্ত পদাদি প্রক্ষালন, বারি সেবন ও বিশ্রামার্থ অনতিদূরস্থ জলাশয় সমীপে গমন করিল। ষোগেশ পালক হইতে নিস্কান্ত হইলেন। র্তাহার মন উদাস—অস্থির অনন্তু চিস্তী সমাচ্ছন্ন। কি করিতে কোথা বিমল । বেলা ৩০ বা ৪ টার সময় পালকী (জ্ঞানাঙ্কুর জ্যৈঃ, ses যাইতেছেন, বা, কি করিলে কি হইবে, - কিছুই যেন অবধারিত নাই। প্রান্তরের দিকে পশ্চাত করিয়া, পালন্ধীর । উপর ভর দিয়া যোগেশ অনস্তু শূন্য । চিন্তু করিতে লাগিলেন । তাছার মন যেন, অনন্ত শূন্য সাগর মধ্যে একাকী পরিভ্রমণ করিতেছে। একাকী—সঙ্গে আর কেহ নাই। এক । সঙ্গে, এককালে, বহুবিধ ঘটনা হৃদয় । মধ্যে প্রবেশ করিলে, মন বিচলিত, অস্থির, ও ধারণা শূন্য হইয়া পড়ে। একটী ঘটনার চিন্তু হইলে, ন্যায়ের নিয়মানুসারে, ধারাবাহিকরূপে ঘটনার । পরিণাম চিন্তা করা যায়, কিন্তু বহু | ঘটনা সমাগত হইলে কদাচ ভদ্রপ ভয় না। তখন চিত্তের উপর আর আধিপত্য থাকে না, ভাবনার ক্রম বা ধারা থাকে না, আবশ্যক অনাবশ্যক জ্ঞান থাকে না । তখন চিত্ত যেন উদাসীন ভাবে অনন্তু নীল নভ স্থলে কপোতিনীবৎ উড্ডীন হইতে থাকে, অনন্ত সাগর বক্ষে বায়ু বিতাড়িত তরণীর ন্যায় বিচলিত হইতে থাকো—উদ্দেশ্য শূন্য, লক্ষ্য শূন্য, বাসন ও চেষ্টা শূন্য। যোগেশের চিত্তের অবস্থা অধুনা সেইরূপ । তিনি ঘোর চিন্তার সমাচ্ছন্ন কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে তাহার এক্ষণেকোনই বিশেষ চিন্তা নাই। তাছার চিত্তের অবস্থা হৃদৃগন্ত করিয়া দিতে চেষ্টা করা বিড়ম্বন।