পাতা:জ্ঞানাঙ্কুর ও প্রতিবিম্ব - চতুর্থ খণ্ড.pdf/৫৫৮

জ্ঞানাঙ্কুর কাঠ ১২৮৩) হইবে, অথচ দেবতা হইবে না, নিধি এখন কি করে ? আমিই বা কি করি ? নিধির মরাই উচিত ছিল। আমার অন্তরে যে বেদন হইয়াছে,নিধিকে মরিতে বলা ভিন্ন আর কি বলি ? নিধিরামকে ঢাকায় লইয়া গিয়াছে। সেখান্সে সে কোথায় থাকিবে ? কেমন করিয়া থাকিবে ? অামাকে পত্র লিখিতে চাহিলে কাগজ, কালী, কলম, পাইবে ত ? নিধিরাম যে উন্মাদগ্ৰস্ত ; সে কি এখন পত্র লিখিতে পরিবে ? তাহা যদি পারে, তবে কতক শান্তি ; তাহা হইলে . মর অপেক্ষ ক্ষেপ ভাল । নিধির কি পত্র লেখা মনে আছে ? ঢাকা কেমন স্থান ? জন্মে দেখি নাই, সুতরাং আমার অপরাধ নাই, কিন্তু শুনিতে পাই যে সেখানে মাটী নাই। সেখানে নৌকায় যাওয়া আসা, নৌকায় শোয়া বসা, নৌকায় খাওয়া পরা, ८र्नाকায় বাজার করা। তবেত বড় বিষম স্থান ! নিধিরাম জল দেখিলে ভয় পায়। সেই জন্য বাল্যকালে নিধি জলের পরিবৰ্ত্তে ডাব খাইত,বয়স হইলে নিজ ল মদ খাইয়া তৃষ্ণ নিবারণ করিত। নিধিরাম একবার বিলাত যাইতে উদ্ভত হইয়াছিল, সমস্ত আয়োজন করিয়াছিল, জাহাজ ভাড়া পৰ্য্যন্তু করিয়াছিল। পরিশেষে, যাইবার দিনে সকাল বেলায় ভূগোল খু.. অনন্ত ভাবাভাব । ○○○ কেবল সমুদ্র আছে বলিয়া নিস্ট্রি বিলাত যাওয়া ঘটে নাই। ঢাকার যদি নৌকাগত প্রকৃতি হয়, নিধির দশায় কি হইবে ? * নিধি যে লেখক, পাঠক, ভাবুক, তাহা বলাই নুিপ্রয়োজন। সুতরাং নিধি বিলাত গেলে সাতকাণ্ডের চূড়স্বরূপ একু কাও নিশ্চিত করিত ; ফিরিয়া আসিলে দশজনকে কাণ্ডজ্ঞান শিক্ষ দিত। কিন্তু পোড়া সমুদেই সব নষ্ট করিল। ফলতুঃ আর উপায় নাই,ভাবিলে, পুরাণ কথা মনে করিয়া ছল ছল চিত্তকে উদ্বেল করিলে, আর কি হইবে । নিধিরাম আমার চির সখা । এখন নিধিও একা, আমিও একা । দুইজনে একত্র জন্মিয়াছি, একত্র শয়নোপবেশন করিয়াছি, একত্র ব্যায়াম বিশ্রাম করিয়াছি ; একত্র বিদ্যানুশীলন করিয়াছি । উদরের জন্য ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি বলিয়া সাধারণ লোকে যাহাকে প্রণয় বলে, তাহা উদরগত। এই উদরেরই দার্শনিক নাম “স্বাৰ্থ”। কিন্তু আমাদের প্রণয় উদরগত ছিল না ; ভালবাসার নিমিত্তই দুই জনে ভালবাসা ছিল ; পাপপুণ্য, সুখ দুঃখ, ইহলোক পরলোক, স্বৰ্গ নরক এ সকল ভাবনা সে প্রণয়ে স্থান পাইত না। ধরাতলে সে প্রণয়ের উপমা নাই, কারণ ধরাতলে সকলই সীমা নিৰুদ্ধ ; লিয়া নিধিরাম দেখিল যে মধ্যে সমুদ্র – পৰ্ব্বত তেমন উচ্চ নয়, অরণ্য তেমন পার না হইলে বিলাত যাওয়া যায় না। 'নিবিড় নয়, জনপদ তেমন পূর্ণ নয়,