পাতা:জ্ঞানাঙ্কুর ও প্রতিবিম্ব - চতুর্থ খণ্ড.pdf/৯২

জ্ঞানাঙ্কুর পে\৪, ১২৮২) হুইবার পথিক ছিল না, প্রশান্ত ভাবে বৃক্ষ শাখা সমাসীন হইয়া কুজন করিবার পক্ষী ছিল না, নিদাৰুণ শীত ভীত হইয়া আশ্রয় মধ্যস্থ থাকিবার জীব ছিল না, এক জীবের ভয়ে অপর জীবের ব্যাকুলতার কোন কারণই ছিল না ; সংসার শান্ত ও শূন্য ছিল । তখন উষার সমাগমে কেহই আহিলাদিত হইয়া উঠিত না, দিনমণির অস্ত গমন কালে পশ্চিম কাশের মনোহর ভাব দেখিয়া কেহই মোহিত হইভ না, সন্ধ্য সমাগমে রজনীর ঘোর তমসাবয়ব স্মরণ করিয়া কেহই ভয় বিকলিত হইত না। দাৰুণ শিলাবৃষ্টিতেও কেহ কাতর হইভ না । গগনমণ্ডলে ইরম্মদ সন্দশমেও কাহার হৃদয় ভয় চকিত হুইত না, অশনি সম্পাতেও কেছ ব্যাকুল হইত না ; পৃথিবীর সেই এক দিন গিয়াছে ! সে সময়ের অবস্থা ভাবিয়া উঠা যায় না, মনে স্থান দেওয়া যায় না, কবির কল্পনা তাহার নিকট পরাভব স্বীকার করে জীব ছিল না, সুতরাং রোগ, শোক, জরা, মৃত্যু, বাৰ্দ্ধক, লোভ-কাম-ক্রোধ প্রভৃতি জীবগণকে উত্ত্যক্ত করিবার কারণ ছিল না । হায় সেই এক দিন ! ভাবিলে হৃদয় অস্থির ছয় । সেই জীব শূন্য, সেই বৃক্ষ লতাদি পরিশূন্য, সাগর বারি পরিবেষ্টিত, প্রস্তর কঙ্কর পরিপূর্ণ, শ্মশান ভুমিবৎ মেদিনী ভূতত্ত্বরহস্য । b"意 মধ্যে এক জন, কেবল এক জন মণত্র মনুষ্য যদি আবিভূত হইত, ভাহা হইলে তাহার হৃদয়ের অবস্থা কি হইত, পাঠক তাহা ভাবিয়া দেখ । দুৰ্ব্বিপাক বশতঃ জুয়ান ফরনগনডেজ দ্বীপে রবিন্সন ক্রুশের অবস্থান স্মরণ করিয়া ও তাছার ুরুশের কথা শুনিয়া মন দাবণ উদাস হইয় উঠে । তথাপি তথায় মনুষ্য ব্যতীত পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত সম্পত্তি ছিল । এই পূৰ্ব্বকালের পৃথিবী রূপ ফারনানডেজে যদি সহস। এক জন রবিশ্বসনের আবির্ভাব হুইত, তাহা হইলে তাহার অবস্থা কি ভয়ানক হুইত ! আমরা প্রসঙ্গতঃ মূল প্রস্তাব হইতে অধিক দূরে আসিয়া পড়িয়াছি। এক্ষণে প্রস্তাবিত বিষয়ে প্রত্যাবর্তন করা বিধেয় । প্রথমে ভূমণ্ডলে জীবনিবাশ ছিল না। ক্রমে ক্রমে, যুগ যুগাস্তর পরে, একে একে, পৃথিবী এই অসংখ্যবিধ জীবের অধিষ্ঠান-ভূত হইয়াছে। একই দিনে পৃথিবীতে কিছুই হয় নাই। সকলেই কালক্রমে জন্মি- | য়াছে । অসম্ভব বিষয় দূরে থাকুক সম্ভব বিষয়ই কই এক দিনে হয় ? এই মনোহর, ময়ন রঞ্জন, হৰ্ম্ম্যমালা সুশো ভিত, উৎসাহ, উদ্যম ও আনন্দ পূর্ণ মহানু পুরী কি এক দিনে গঠিত হই য়াছে ? এই যে সামাজিক নিয়ম সমস্ত আমাদিগকে দাসবৎ করিয়া রাখিয়াছে