পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
২১

রাজবাটীতে আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং রাণীঠাকুরাণীর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া বলিলেন, আমাদিগের যাহাই হউক, তাহাতে ক্ষতি নাই, কিন্তু আমাদিগের মহিলাদিগের সংরক্ষণভার আপনাকে লইতেই হইবে। তাহা- দিগকে আপনার রাজবাটীতে আশ্রয় দিউন, ইহাই আমাদের বিনীত প্রার্থনা। রাণীঠাকুরাণী উত্তর করিলেন, আমার যতদুর সাধ্য আমি করিব, তোমাদিগের কোন চিন্তা নাই। তাহার পর দিবস, য়ুরোপীয় মহিলারা রাজবাটীতে প্রবেশ করিলেন। তাহাদিগের থাকিবার জন্য একটা প্রশস্তস্থান নির্দিষ্ট হইল এবং তাহাদিগের রক্ষার জন্য প্রহরী নিযুক্ত হইল। কিন্তু ছাউনী মধ্যে বিদ্রোহীরা যখন হত্যাকাণ্ড আরম্ভ করিল, তখন তত্রস্থ য়ুরোপীয়েরা ভীত হইয়া কেল্লার মধ্যে প্রবেশ করিল এবং তাহাদিগের মহিলাদিগকেও রাজবাটী হইতে উঠাইয়া আনিয়া কেল্লার মধ্যে স্থাপন করিল! কেল্লার মধ্যে চলিয়া যাইবার পরেও, রাণীঠাকুরাণী য়ুরোপীয়দিগকে বারম্বার ভরসা দিলেন এবং দুই তিন দিবস পর্যন্ত গোপনে রাত্রিকালে তিন মণ করিয়া গমের রুটি তাহাদের আহারের জন্য পাঠাইতে লাগিলেন। এদিকে, কর্ণেল ম্যালিসন সাহেব বলেন, “রাণীঠাকুরাণী মুখ্য-মণ্ডলী-সমভিব্যাহারে দুই নিশান উড়াইয়া মহাসমারোহে ছাউনীর মধ্যে উপস্থিত হইলেন। সেইখানে হাসন-আলী নামক এক মোর্লা, সকল মুসলমানকে নিমাজ পড়িতে ডাকিয়া তাহাদিগকে বিদ্রোহী হইতে উত্তেজিত করিল এবং সেই উত্তেজনাবাক্যে সকল লোকে অস্ত্রশস্ত্র লইয়া প্রস্তুত হইল।” কিন্তু আমাদের লেখক বলেন, ইহা ম্যালিসন সাহেবের বুঝিবার ভুল। কারণ, রাণীঠাকুরাণীর সপত্নীমাতা বলেন, সে সময়ে তিনি রাজবাটী হইতে আদৌ বাহির হন নাই। বোধ হয়, বিদ্রোহীরা একটা মিথ্যা ঠাট সাজাইয়া লোকদিগকে উৎসাহিত করিবার জন্যই এইরূপে বাহির হইয়া থাকিবে।

 রাণীঠাকুরাণী, প্রথমে বিদ্রোহীদিগকে যে সাহায্য করেন নাই তাহার