পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
৬৩

 রাণী লক্ষ্মীবাই ঋশি হইতে বহির্গত হইয়া, ১০/১৫ জন সওয়ার-সঙ্গে, ভাণ্ডের-নামক এক সহরে আসিয়া পৌছিলেন। ঘোড়া হইতে নামিয়া, সহরকোতোয়ালের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া, স্বীয় দত্তক-পুত্র দামোদর রাওর জন্য আহারের যোগাড় করিলেন। এবং আহারাদি সমাপন করিয়া কাল্পী সহর অভিমুখে যাত্রা করিলেন। এদিকে লেফটেনেণ্ট বোকর কতকগুলি অশ্বারোহী-সৈন্য লইয়া রাণীকে অনুধাবন করিতেছিলেন। পথিমধ্যে তাহার সহিত সাক্ষাৎ হওয়ায়, রাণী ভঁহাকে তলবারের দ্বারা আঘাত করিয়া, ঘোড় সবেগে ছুটাইয়া নিমেষের মধ্যে অদৃশ্য হইয়া পড়িলেন। এবং ১৮৫৮ অব্দের ১২ জুন তারিখে কাল্পীতে আসিয়া পৌছিলেন। সেখানে, নানাসাহেবের ভ্রাতা রাও-সাহেব স্বসৈন্তে অবস্থিতি করিতেছিলেন। রাত্রিতে বিশ্রাম করিয়া, পর দিন প্রাতে শ্রীমন্ত রাও- সাহেব পেশোয়ার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। এবং অপূর্ণ নয়নে নিজ তলবার রাও-সাহেবের হস্তে দিয়া এইরূপ বলিলেন “তোমার পূর্বপুরুষেরাই এই তলবার আমাদিগকে দিয়াছেন। তাহাদের পুণ্য-প্রতাপে আজ পর্যন্ত আমি এই তলবারের যোগ্য ব্যবহার করিয়াছি। এক্ষণে তুমি আর সাহায্য করিতেছ না—অতএব, এই তলবার আমি তোমাকে ফেরত দিতেছি”। এই কথা শুনিয়া, রাও-সাহেবের হৃদয় বিগলিত হইল; এবং তাহার সৈন্যের দ্বারা রাণীর যে সাহায্য হয় নাই, তজ্জন্য দুঃখ প্রকাশ করিয়া এইরূপ বলিলেন “আপনি আজ পর্যন্ত, ঝুঁশির সুবেদার-বংশের অনুরূপ যে পরাক্রম প্রকাশ করিয়াছেন এবং প্রবল ইংরাজ-সৈন্যের হস্ত হইতে আপনাকে মুক্ত করিয়া যেরূপ রণ-কৌশল প্রদর্শন করিয়াছেন, তাহাতে আপনার ন্যায় বীরাঙ্গনা যদি সমস্ত সৈন্যের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন, তাহা হইলেই আমাদিগের জয়ের সম্ভাবনা। আমাদিগের পূর্বপুরুষদিগের সময়ে, শিদিয়া হোলকার, গায়কবাড়, বুলে, প্রভৃতি সর্দারগণ রাজ্যরক্ষার্থ আপনাদিগের প্রাণ বিসর্জন করিতে তৎ-