পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।

দিগের জোট ভাঙ্গিবার জন্য, ওএলেসলি, লেক্ প্রভৃতি ইংরাজ সেনাপতিগণ, প্রকাশ্যরূপে পেশোয়ার পক্ষ অবলম্বন করিয়া সংগ্রামে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। এই সময়ে বুণ্ডেলখণ্ডের সুবেদার শিবরাও ভাউ ইঁহাদিগকে নানাপ্রকারে সাহায্য করেন। সেই অবধি, ইংরাজ-সরকার ঝাঁশি-রাজ্যের সহিত মিত্রতা-সূত্রে আবদ্ধ হইলেন। অনন্তর শিবরাও-ভাউ স্বীয় পৌত্র রামচন্দ্র রাওর হস্তে ঝাঁশি-রাজ্য ন্যস্ত করিয়া, শ্রীক্ষেত্র ব্রহ্মাবর্ত্তে প্রস্থান করেন। এই সময়ে পুণা নগরস্থ পেশোয়া বিলাসের গভীরতম রসাতলে নিমগ্ন থাকায়, মহারাষ্ট্র-রাজ্যের সমস্ত আধিপত্য অল্পে অল্পে ইংরাজের হস্তগত হইতেছিল। রামচন্দ্র-রাও যখন ঝাঁশির গদিতে উপবিষ্ট হইলেন, তখন তাঁহার বয়স অতি অল্প ছিল, সুতরাং তাঁহার হইয়া তাহার মাতৃদেবী সখুবাই ও রাজ্যের পুরাতন দেওয়ান রাও-গোপাল-রাউ, ইঁহারাই রাজকার্য নির্ব্বাহ করিতেন। ১৮১৭ অব্দে সুবেদার রামচন্দ্রের তরফে গোপাল-রাও-ভাউ এবং ব্রিটিশ সরকারের তরফে পোলিটিকেল সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট জন-ওয়াকোপ—ইঁহাদের মধ্যে একটা সন্ধিপত্র লেখাপড়া হইল। রাও রামচন্দ্র বংশপরম্পরাক্রমে ঝাঁশি-রাজ্যের অধিকারী, এই কথা ব্রিটিশ সরকার এই সন্ধিপত্রে স্বীকার করিলেন এবং উভয় সরকার পরস্পরের সহিত মিত্রতা-সূত্রে আবদ্ধ হইয়া বিপদাপদে পরস্পরের সাহায্য করিবেন, এইরূপ স্থির হইল। এই সন্ধিপত্রের পণানুসারে রামচন্দ্র রাও বাস্তবিকই ইংরাজদিগকে নানাপ্রকারে সাহায্য করিয়াছিলেন। এই সকল উপকার স্মরণ করিয়া কৃতজ্ঞ ইংরাজ-সরকার ১৮৩২ খৃষ্টাব্দে একটা দরবারের অনুষ্ঠান করিয়া, ঝাঁশির সুবেদারকে “মহারাজাধিরাজ” ও “ফিদবী বাদশাহা জানুজা ইংগ্লস্তান” (মহিমান্বিত ইংলণ্ডেশ্বরের একনিষ্ঠ সেবক) এই উপাধি অর্পণ করিলেন। শুদ্ধ তাহাই নহে, ইঁহাকে ছত্রচামরাদি রাজ-চিহ্ন ধারণের অধিকার প্রদান করিলেন এবং রামচন্দ্রের অনুরোধ-অনুসারে ঝাঁশির কেল্লার উপর ব্রিটিশ-পতাকা “য়ুনিয়ন জ্যাক্‌” স্থাপন করিবার