ধরিয়া টানিয়া তুলিয়া দাঁড় করাইল। সাইমন দেখিল তার দেহখানি বেশ সুন্দর, বলিষ্ঠ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, হাতপাগুলি বেশ গোলগাল মুখখানি খুব সুশ্রী-যেন দয়ামায়া-মাখানেো। নিজের জামাটা সাইমন তার কাঁধের উপর চাপাইয়া দিল, কিন্ত লোকটি গায়ে দিতে গিয়া হাতা খুঁজিয়া পাইল না। সাইমন তার হাত দুটি টানিয়া কোটের ভিতর পরাইয়া দিয়া বেশ ঠিক্ঠাক্ করিয়া দিল। তার পরে নিজের বেল্ট তার কোমরে জড়াইয়া দিল।
নিজের অতি পুরাতন জীর্ণ টুপীটাও সে তার মাথায় পরাইয়া দিবে মনে করিয়াছিল; কিন্তু তার নিজের মাথায়ই ভয়ানক ঠাণ্ডা লাগিতে লাগিল বলিয়া সে ভাবিল, “আমার মাথায় টাক, ওর মাথাটি ত বেশ সুন্দর কোঁকড়ান চুলে ভরা, সুতরাং টুপী না হ’লেও ওর চল্তে পারে!” এই ভাবিয়া টুপীটি সে নিজের মাথায়ই চাঁপাইয়া দিল। তারপর ভাবিল, “ওর পায়ের জন্যে বরং একটা কিছু বন্দোবস্ত করলে ভাল হয়, আচ্ছা দেখা যাক্।’ তারপর লোকটিকে সেখানে বসাইয়া বুট জোড়া পায়ে পরাইয়া দিতে দিতে বলিল—ব্যস্ ভাই, একটু হেঁটে শরীরটাকে গরম ক’রে নাও; তার পরে আর সব দেখা যাবে। তুমি চল্তে পার্বে কি?”
লোকটি উঠিয়া দাঁড়াইয়া অতি করুণভাবে সাইমনের মুখের দিকে তাকাইয়া রহিল, কিন্তু একটা কথাও বলিতে পারিল না।
সাইমন জিজ্ঞাসা করিল—“কিহে, তুমি কথা কও না কেন? এত ঠাণ্ডা যে এখানে আর দাঁড়ানো যাচ্ছে না। এখুনি বাড়ী ফির্তে হবে। যদি এত কাবু হ’য়ে থাক যে চল্তে পার্ছ না, তা হ'লে আমার এই লাঠিটা নাও, এইটে ভর দিয়ে চল্বে এখন; চল!”