পাতা:টুনটুনির বই.djvu/৩৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কুঁজো বুড়ীর কথা



এক যে ছিল কুঁজো বুড়ী। সে লাঠি ভর দিয়ে কুঁজো হয়ে চলত, আর তার মাথাটা খালি ঠক-ঠক করে নড়ত। বুড়ীর দুটো কুকুর ছিল। একটার নাম রঙ্গা, আর একটার নাম ভঙ্গা।

 বুড়ী যাবে নাতনীর বাড়ি, তাই কুকুর দুটোকে বললে, ‘তোরা যেন বাড়ি থাকিস, কোথাও চলে-টলে যাসনে।’

 রঙ্গা-ভঙ্গা বললে, ‘আচ্ছা।’ তারপর বুড়ী লাঠি ভর দিয়ে, কুঁজো হয়ে যাচ্ছে, আর তার মাথাটা খালি ঠক-ঠক করে নড়ছে। এমনি করে সে খানিক দূর গেল।

 তখন এক শিয়াল তাকে দেখতে পেয়ে বললে, ‘ঐ রে, সেই কুঁজো বুড়ী যাচ্ছে। বুড়ী, তোকে তো খাব!’

 বুড়ী বললে, রোস, আমি আগে নাতনীর বাড়ি থেকে মোটা হয়ে আসি, তারপর খাস। এখন খেলে তো শুধু হাড় আর চামড়া খাবি, আমার গায়ে কি আর কিছু আছে।’

 শুনে শিয়াল বললে, ‘আচ্ছা, তবে মোটা হয়ে আয়, তারপর খাব এখন।’ বলে শিয়াল চলে গেল।

 তারপর বুড়ী আবার লাঠি ভর দিয়ে কুঁজো হয়ে যাচ্ছে, তার তার মাথাটা ঠক-ঠক করে নড়ছে। এমনি করে আরো খানিক দূর গেল।

 তখন এক বাঘ তাকে দেখতে পেয়ে বললে, ‘ঐ রে, সেই কুঁজো বুড়ী যাচ্ছে। বুড়ী, তোকে তো খাব!’

 বুড়ী বললে, ‘রোস, আমি আগে নাতনীর বাড়ি থেকে মোটা হয়ে আসি, তারপর খাস। এখন খেলে তো শুধু হাড় আর চামড়া খাবি, আমার গায়ে কি আর কিছু আছে?

 শুনে বাঘ বললে, ‘আচ্ছা, তবে মোটা হয়ে আয়, তারপর খাব এখন।’ বলে বাঘ চলে গেল।

 তারপর বুড়ী আবার লাঠি ভর দিয়ে কুঁজো হয়ে যাচ্ছে, আর তার মাথাটা ঠক-ঠক করে নড়ছে। এমনি করে সে আরও খানিক দূর গেল।

 তখন এক ভাল্লুক তাকে দেখতে পেয়ে বললে, ‘ঐ রে, সেই কুঁজো বুড়ী যাচ্ছে। বুড়ী, তোকে তো খাব!’

৩৫