দাসীর হাতে কুলো আটকাল,
রানীর হাতে থালা আটকাল।
বলতে-বলতেই তো রাজামশাই পিঁড়িতে খুব ভালোমতোই আটকে গেলেন। কত টানাটানি করলেন, কিছুতেই উঠতে পারলেন না। চাকরদের ডাকলেন, তারাও কিছু করতে পারল না। তখন সেই পিঁড়িসুদ্ধ তাকে চারজনে ধরাধরি করে এনে সভায় বসিয়ে দিলে।
তা দেখে সভার লোকদের তো ভারী মুশকিলই হল। তাদের ভয়ানক হাসি পাচ্ছে। তার হাসি থামাতে পারছে না, হাসতেও পারছে না, পাছে রাজামশাই রাগ করেন। কেউ ভয়ে জিগগেস করতেও পারছে না রাজামশাইয়ের কি হয়েছে।
তখন রাজামশাই নিজেই বললেন, ‘তোমরা বুঝি জানতে চাচ্ছ, আমি পিঁড়িতে কি করে আটকে গেলাম।’
তারা হাত জোড় করে বললে, ‘হ্যাঁ মহারাজ।’
রাজা বললেন, ‘তা যদি বলি, তবে তোমরাও যে যার বসবার জায়গায় আটকে যাবে।’
তারা বললে, ‘মহারাজ যদি আটকালেন, তবে আমরা আর বাকি থাকি কেন?’
তখন রাজা বললেন—
উকুনে-বুড়ী পুড়ে মোলো,
বক সাতদিন উপোস রইল,
নদীর জল ফেনিয়ে গেল,
হাতির লেজ খসে পড়ল,
গাছের পাতা ঝরে পড়ল,
ঘুঘুর চোখ কানা হল,
রাখালের হাতে লাঠি আটকাল,
দাসীর হাতে কুলো আটকাল,
রানীর হাতে থালা আটকাল,
পিঁড়িতে রাজা আটকাল।
বলতেই আর তারা যাবে কোথায়! এমনি করে তারা তক্তপোশে আটকে গেল যে, আর তাদের উঠবার সাধ্য নেই।
ভাগিাস সেই দেশে এক খুব বুদ্ধিমাম নাপিত ছিল, নইলে মুশকিল হয়েছিল আর কি! নাপিত এসে বললে, ‘শীগগির ছুতোর ডাক।’