এক গরিব ব্রাহ্মণ ছিলেন। তার ঘরে ব্রাহ্মণী ছিলেন, আর ছোট্ট একটি মেয়ে ছিল কিন্তু তাদের খেতে দেবার জন্যে কিছু ছিল না। ব্রাহ্মণ অনেক কষ্টে ভিক্ষা করে যা আনতেন, এক বেলায় ভালো করে না খেতেই তা ফুরিয়ে যেত। সকল দিন আবার তাও মিলত না।
একদিন তাদের ছোট্ট মেয়েটি পাশের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। গিয়ে দেখল, সে বাড়িতে পায়েস রান্না হয়েছে, ছেলেরা পায়েস খাচ্ছে। দেখে সেই মেয়েটিরও বড্ড পায়েস খেতে ইচ্ছে হল। তাই সে বাড়ি এসে তার মাকে বললে, ‘মা, আমাকে পায়েস করে দাও না, আমি পায়েস খাব!’
শুনে তো তার মা কাঁদতে লাগলেন। ভাতই ভালো করে খেতে পান না, পায়েস আবার কি করে করবেন?
এমন সময় ব্রাহ্মণ ভিক্ষে নিয়ে ফিরে এসে ব্রাহ্মণী কাঁদছেন দেখে জিগগেস করলেন, ‘কাঁদছ কেন ব্রাহ্মণী, কি হয়েছে?’
ব্রাহ্মণী বললেন, ‘মেয়ে পায়েস খেতে চেয়েছে, পায়েস কোত্থেকে দেব, তাই কাঁদছি।’
শুনে ব্রাহ্মণ বললেন, ‘আচ্ছা, আমি দেখছি এর একটা কিছু করতে পারি কিনা, তুমি কেঁদ না’ বলে তিনি তখুনি আবার বেরিয়ে গেলেন।
সেই গ্রামে একজন খুব ভালো জমিদার ছিলেন।
তিনি যেই শুনলেন, ব্রাহ্মণের মেয়ে পায়েস খেতে চেয়েছে, অমনি তাঁকে চমৎকার গোপালভোগ চাল, দু-সের দুধ, চিনি আর মসলা দিলেন।
ব্রাহ্মণ তাতে খুব খুশী হয়ে, জমিদারকে আশীর্বাদ করে, ছুটে বাড়ি এসে ব্রাহ্মণীকে বললেন, ‘এই নাও, তোমার পায়েসের যোগাড় এনেছি।’
সেই ব্রাহ্মণী কি লক্ষ্মী মেয়েই ছিলেন! তিনি এমনি সুন্দর রাঁধতেন যে, তেমন রান্না কেউ কখনো খায়নি। তিনি যখন পায়েস রাঁধতে লাগলেন, তখন তার চমৎকার গন্ধে আশে পাশে সকল লোক পাগল হয়ে উঠল।
একটা কাক সেই পায়েসের গন্ধ পেয়ে বললে, ‘আহা! এমন চমৎকার জিনিস একটু না খেয়ে দেখলে চলছে না।’
বলেই সে ব্রাহ্মণের ঘরের চলে এসে বসল।