পাতা:টুনটুনির বই.djvu/৯৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 শিয়াল বললে, ‘তুমি কি আর তোমার হাত-পা চিবিয়ে খেতে পারবে? তাই বলিনি।’

 এ কথায় বাঘ ভীষণ রেগে বললে, ‘তুই শিয়াল হয়ে পারলি, আর আমি বাঘ হয়ে পারব না?’

 শিয়াল বললে, ‘তুমি দুটো ঠাট্টার ভয়ে অমন বিয়েটা ছেড়ে এলে! এখন যে হাত-পা চিবিয়ে খেতে পারবে তা আমি কি করে জানব?’ তখন বাঘ বললে, ‘পারি কি না, এই দেখ।’ বলে সে নিজের হাত-পা চিবিয়ে খেল। তারপর তিন-চার দিনের মধ্যেই ভয়ানক ঘা হয়ে সে মারা গেল।


বাঘের রাঁধুনি

এক বাঘের বাঘিনী মরে গিয়েছিল। মরবার সময় বাঘিনী বলে গিয়েছিল, ‘আমার দুটো ছানা রইল, তাদের তুমি দেখো।’

 বাঘিনী মরে গেলে বাঘ বললে, ‘আমি কি করে বা ছানাদের দেখব, কি করে বা ঘরকন্না করব।’

 তা শুনে অন্য বাঘেরা বললে, ‘আবার একটা বিয়ে কর, তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

 বাঘও ভাবলে, ‘একটা বিয়ে করলে হয়। কিন্তু আর বাঘিনী বিয়ে করব না, তারা রাঁধতে-টাঁধতে জানে ন। এবারে বিয়ে করব মানুষের মেয়ে, শুনেছি তারা খুব রাঁধতে পারে।

 এই মনে করে সে মেয়ে খুঁজতে গ্রামে গেল। সেখানে এক গৃহস্থের একটি ছেলে আর একটি মেয়ে ছিল। বাঘ সেই মেয়েটিকে ধরে এনে, তার ছানা দুটোকে বললে, ‘দেখ রে, এই তোদের মা।’

 ছানা দুটো বললে, লেজ নেই, দাঁত নেই, রোঁয়া নেই, ডোরা নেই—ও কেন আমাদের মা হবে। ওটাকে মেরে দাও, আমরা খাই।’

 বাঘ বললে, ‘খবরদার। অমন কথা বলবি তো তোদের ছিঁড়ে টুকরো-টুকরো করব!’

 তাতে ছানা দুটো চুপ করে গেল। কিন্তু সেই মেয়েটাকে তারা একেবারেই

৯০