বড়রাণীরা ছোটরাণীর মুখের কাছে রঙ্গ-ভঙ্গী করিয়া হাত নাড়িয়া, নখ নাড়িয়া বলিয়া উঠিল,-"ছেলে না, হাতী হইয়াছে,-ওঁর আবার ছেলে হইবে!-কটা ইঁদুর আর কটা কাঁকড়া হইয়াছে।"
শুনিয়া ছোটরাণী অজ্ঞান পড়িয়া রহিলেন।
নিষ্ঠুর বড়রাণীরা আর শিকলে নাড়া দিল না। চুপি-চুপি হাঁড়ি-সরা আনিয়া ছেলেমেয়েগুলোকে তাহাতে পুরিয়া, পাঁশ-হাদার পুঁতিয়া ফেলিয়া আসিল। তাহার পর শিকল ধরিয়া টান দিল।
রাজা আবার ঢাক-ঢোলের বাদ্য দিয়া, মণি-মাণিক হাতে ঠাকুর-পুরুত নিয়া আসিলেন; বড়রাণীরা হাত মুছিয়া, মুখ মুছিয়া তাড়াতাড়ি করিয়া কতকগুলো ব্যাঙের ছানা, ইঁদুরের ছানা আনিয়া দেখাইল।
দেখিয়া রাজা আগুন হইয়া ছোটরাণীকে রাজপুরীর বাহির করিয়া দিলেন।
বড়রাণীদের মুখে আর হাসি ধরে না,-পায়ের মলের বাজনা থামে না। সুখের কাঁটা দূর হইল; রাজপুরীতে আগুন দিয়া ঝগড়া-কোন্দল সৃষ্টি করিয়া ছয় রাণীকে মনে সুখে ঘরকান্না করিতে লাগিলেন।
পোড়াকপালী ছোটরাণীর দুঃখে গাছ-পাথর ফাটে, নদীনালা শুকায়-ছোটরাণী দাসী হইয়া পথে পথে ঘুরিতে লাগিলেন।