উদিত হইয়াছিল, এতক্ষণে তাহা দূর হইল, আমিও নিশ্চিন্ত হইলাম।
পিতামাতা প্রভৃতি সকলেই রোদন করিতে লাগিলেন। চিতার প্রজ্জ্বলিত-অগ্নি নির্ব্বাণের সঙ্গে সঙ্গে তাহার স্ত্রীর আর্ত্তনাদ নির্ব্বাপিত না হইয়া ক্রমে আরও প্রবলরূপ ধারণ করিতে লাগিল। আমি স্বচক্ষে উহাদিগের অবস্থা দেখিতে লাগিলাম। উহাদিগের মর্ম্মভেদী আর্ত্তনাদ আমার কর্ণকুহরে সবলে প্রতিঘাত করিতে লাগিল, কিন্তু ইহাতে আমার কঠিন হৃদয় কিছুমাত্র দ্রবীভূত হইল না। আমি আমার পাষাণ হৃদয়কে আরও দৃঢ় করিলাম, এবং কি উপায় অবলম্বন করিলে বিনাক্লেশে উক্ত ত্রিশ হাজার টাকা পাইতে পারি, তাহাই মনে মনে চিন্তা করিতে লাগিলাম।
এইরূপে ক্রমে পাঁচ সাতদিবস গত হইয়া গেল; দেখিলাম, সকলের শোকাবেগ ক্রমে মন্দীভূত হইয়া আসিতে লাগিল। এই কয়েকদিবস ভাবিয়া-চিন্তিয়া যে উপায় আমি মনে মনে স্থির করিয়াছিলাম, সেই উপায় অবলম্বন করিলাম, অর্থাৎ বীমা আফিসে উক্ত টাকার নিমিত্ত আমি প্রথমে একখানি পত্র লিখিলাম। এই পত্রের সারমর্ম্ম এই:—“আপনাদিগের আফিসে ত্রিশ হাজার টাকার নিমিত্ত আমার ভ্রাতার জীবন বীমা আছে। অদ্য ছয় সাতদিবস হইল, তিনি বিসূচিকারোগে আক্রান্ত হইয়া ইহজীবন পরিত্যাগ করিয়াছেন। মৃত্যুর পূর্ব্বে তিনি তাঁহার বীমার স্বত্ত্ব আমার নিকট বিক্রয় করিয়াছিলেন। সুতরাং আইন-অনুযায়ী আমি এখন উক্ত টাকার ন্যায্য অধিকারী। অতএব মহাশয়দিগকে