পাতা:তত্ত্ববিচার.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তত্ত্ববিচার।

সুশীতল হইবে। আমি নিজে চাহিয়া লইলে আর কয়টী অভাব পূর্ণ হইবে? কেননা আমি যে নিজের কি কি চাই তাহাই জানি না। ভগবান ভাল বুঝিয়া যাহা আমাদের মঙ্গলের সমস্তই দিবেন; জ্ঞান, ভক্তি, বিবেক, বৈরাগ্য প্রভৃতি যাহা কিছু আমাদিগকে তাঁহার চরণ সেবার উপযোগী করিবার জন্য দরকার, সে সমস্তেই তিনি আমাদিগকে শোভিত করিবেন। আমরা কেবল নিজে নিজে তাঁহার শরণাগত হইতে পারিলেই কৃতকৃতার্থ হইয়া যাইব, কামক্রোধাদি[১] কোন দোষের দিকেই তাকাইয়া আমাদিগকে ভীত বা পশ্চাৎপদ হইতে হইবে না। আমরা একটী একটী করিয়া কয়টা দোষেরই বা সংশোধন করিতে পারিব; কিন্তু একরার তাঁহার অলোক-সামান্য রূপ দেখিলে, ইতর সমস্তই কূৎসিত দেখাইবে, তাহাতে আর মন মজিবে না।

 ভগবানের কৃপাদৃষ্টি হইবামাত্রই আমাদের জ্ঞাত ও অজ্ঞাত সমস্ত পাপেরই অবসান হইয়া যাইবে। গঙ্গাজলে নামিলেই ময়লামাটী

  1. লোকে কামাদিকে রিপু বলিয়া বর্ণন করে, অথচ কার্য্যকালে তাহাদিগের সহিত পরম মিত্রের ন্যায় ব্যবহার করিয়া থাকে। ব্রহ্মাদি জয়-সংরূঢ় কামের প্রতি শত্রুর ন্যায় ব্যবহার করিলে, একবার অশ্রদ্ধা করিলে আর কি কাম আসিয়া থাকে? কিন্তু কামের আগমন কালে লোক সকল বিচিত্র বেশভূষায় শোভিত হইয়া তাহার অভ্যর্থনা করিয়া থাকে; সুতরাং কাম আসিবে না কেন? আর মনুষ্যের কি সামর্থ্য যে কন্দর্পের ন্যায় প্রতাপী পুরুষকে পরাভূত করে? সুতরাং দীনহীন কাঙ্গালের ন্যায় রিপুদলের দর্শনে ভীত চকিত হইয়া ভগবানের চরণপ্রান্তে ছুটিয়া যাও; তাঁহার আশ্রয়ে কেহই আক্রমণ করিতে পারিবে না, সে শক্তিতে সকলেই পরাভূত হইবে। জলে অবগাহন করিলেই সমস্ত উত্তাপ একেবারে শীতল হইয়া যাইবে।