পাতা:তত্ত্ববিচার.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
তত্ত্ববিচার।

যে, আমি ব্যাকরণ, সাহিত্য ও দর্শনাদিতে সুপণ্ডিত হইয়াছি; গীতা স্বতন্ত্ররূপে পাঠ করিবার প্রয়োজন হয় নাই, আমি এমনই উহার অর্থ করিতে পারিব। রাজা বলিলেন, শাস্ত্রশিক্ষা গুরুমুখী না হইলে উহা অসিদ্ধ; তুমি পুনর্ব্বার কাশীতে গিয়া গীতা পড়িয়া আইস। বিদ্যার্থী কাশীতে আসিয়া জনৈক পণ্ডিতের নিকট ভাষ্য টীকা সহিত গীতা পড়িয়া পুনর্ব্বার রেওয়ায় গমন করিলেন, এবং রাজসমীপে পণ্ডিতমণ্ডলীর সহিত শাস্ত্রার্থ করিবার অনুমতি চাহিলেন। তাহাতে রাজা বলিলেন, তুমি কি গীতা কোন সন্ন্যাসী সাধুর নিকট পাঠ করিয়াছ? রাজা যখন শুনিলেন যে, তিনি গীতা কোন পণ্ডিতের নিকট পড়িয়াছেন, সাধুর নিকট পড়েন নাই, তখন বলিলেন যে, তুমি পুনর্ব্বার কাশীতে যাও এবং কোন ভগবদ্ভক্ত সাধু সন্ন্যাসীর নিকট গীতা পুনর্ব্বার পাঠ করিয়া আইস। পণ্ডিতগণ প্রায়ই পাণ্ডিত্যের অভিমানে অহম্মন্যতায় উন্মত্ত হইয়া কাহাকেই শ্রেষ্ঠ বলিয়া মানিতে চাহেন না। রাজ-গুরুপুত্র যখন সেইরূপ পণ্ডিতের কাছে বিদ্যাভ্যাস করিয়াছেন, তখন তাহার হৃদয়ে অহম্মন্যতার অন্ধতামসী শক্তি সঞ্চারিত হইবে না কেন? তাই রাজার কথায় একটু বিরক্ত হইয়া তিনি বলিলেন যে, আমি যেরূপ গীতা পড়িয়াছি তাহা অপেক্ষ সন্ন্যাসী সাধু আর কি নূতনরূপ পড়াইবেন? রাজা তথাচ তাহাকে কাশীতে পাঠাইয়া দিলেন, এবং বিদ্যার্থী কাশীতে পুনরাগত হইয়া একজন ভক্তিমান্ বৈরাগ্যবান্ সাধুর নিকট গীতা পুনরধ্যয়ন করিলেন। পাঠ সমাপ্ত হইলে গুরুকে অভিবাদনপূর্ব্বক গুরুর আজ্ঞা, ও আশীর্ব্বাদ লইয়া তিনি রেওয়ায় প্রত্যাবৃত্ত হইলেন, কিন্তু সেবার আর রাজ-সভায় গমন করিলেন না। রাজা গুরুপুত্রের পুনরাগমন সংবাদ পাইবা গুরুকে জিজ্ঞাসা করিলেন যে, এবার, আপনার