পাতা:তত্ত্ববিচার.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
তত্ত্ববিচার।

সেইরূপ সৎসঙ্গ ও বিবেকরূপ নয়নদ্বয়ের সাহায্যে পদার্থের স্বরূপ উত্তমরূপে দৃষ্ট হয়। আমাদের দুর্ভাগ্য দোষে ও অভিমানের উত্তাপে আমরা দুইটী চক্ষুই হারাইয়া বসিয়াছি; সাধ করিয়া অন্ধ হইয়া সকল অন্ধকার দেখিতেছি। সংবাদ-পত্রে পাঠ করিয়াছি, বিলাতের একজন মাতাল অতিরিক্ত মদ্যপানের দোষে নেত্রের দৃষ্টি-শক্তি হারাইয়াছিল। অনেক দিন চিকিৎসা হইলে পর যখন কিছুতেই পীড়া আরোগ্য হইল না, তখন ডাক্তার বলিলেন, তোমাকে আর কোনও ঔষধই সেবন করিতে হইবে না, কেবল যে মহাবিষরূপ সুরা সেবন করিতেছ, তাহাই ছাড়িতে হইবে; মদত্যাগ করিলেই তোমার ব্যাধির শান্তি হইবে। মাতাল বলিল, ইহা ব্যতীত কি রোগ-শান্তির অন্য উপায় নাই? ডাক্তার বলিলেন—না। তখন মাতাল বলিয়া উঠিল, প্রাণত্যাগ করিতে পারিব, কিন্তু মদ্যত্যাগ করিতে পারিব না; যদি মদ না ছাড়িলে চক্ষু ভাল না হয়, then good-bye to my eyes (চক্ষুদ্বয়! তবে তোমাদের নিকট হইতে বিদায় হইলাম,) এই বলিয়া ক্ষান্ত হইল। মাতাল আপনার দোষে আপনার চক্ষুদুটী জন্মের মত হারাইল! আমরা সেইরূপ মোহ-মদিয়া-পানে প্রমত্ত হইয়া চক্ষুদুটী (সৎসঙ্গ ও বিবেক) হারাইয়াছি।

“পীত্বা মোহময়ীং প্রমোদমদিরাং উন্মত্তভূতং জগৎ॥”

 সাধারণ মাতালেরা দুই দশ বৎসর মদ খাইয়াই অন্ধত প্রাপ্ত হয়; কিন্তু আমরা জন্ম-জন্মান্তর হইতে এই মোহ-সুরা পান করিয়া আসিতেছি, আমরা যে অন্ধ হইয়া পড়িব, তাহাতে আশ্চর্য্য কি? বিষয় পিপাসার কাতর হইয়া আমরা সুধা-বোধে যে সুরা পান করিয়াছি, তাহাতেই আমরা জন্মান্ধ। জন্মান্ধ কখনই কিছু দেখে নাই; চক্ষুষ্মান্