পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (একাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাৰ্ত্তিক ১৮৭৮ নির্ভর করে। ব্রাহ্মণ সেই ধৰ্ম্মোন্নতি সাধনে নিযুক্ত। মনুতে গার্হস্থ্যের শ্রেষ্ঠতা প্রতিপাদিত হইয়াছে । সুতরাং ব্রাহ্মণদিগের অধিকাংশই যে গৃহস্থ ছিলেন, তদ্বিষয়ে কোন সন্দেছ নাই । গৃহীদিগের নানা কার্স্য। এই গৃহকার্ষ্যে ব্যাপৃত থাকিলে ব্রাহ্মণের জাতীয় উন্নতির নিদান ধৰ্ম্মে শিথিল-প্রযত্ব হইবেন, এই আশঙ্কায় মন্ত সাংসারিক কার্স অপর | তিন বর্ণে অৰ্পণ করিয়াছেন । এই বিষয়ট স্পষ্ট বুঝাইবার জন্য একটা দৃষ্টান্ত দেই। মনে কর কোন এক পরিবারে একটি কর্তা আছেন। তঁহার লক্ষ্য পারিবারিক শ্ৰীবৃদ্ধি। এক্ষণে পাকক্রিয়৷ গোসেবা কৃষি এবং আর আর মাংসারিক কাৰ্যা যদি সমস্তই তাহাকে করিতে হয়, তাহা হইলে কি কোন জন্মে তিনি ঐকৃদ্ধি করিতে পারেন। কখনই না। বারিক ব্যবস্থায় লোকভেদে কার্য্যবিভাগ আছে এবং ইহারই বলে গুহস্বামীর অভীষ্ট্র সিদ্ধি হয়। একটা ক্ষুদ্র পরিবারে যেরূপ । ব্যবস্থা, মনু সমস্ত ভারতের পক্ষে তাহাই করিয়াছিলেন । ইছার সুফল ধৰ্ম্ম ও সমাজের অসম্ভব উন্নতি, আজিও আমরা তাঙ্গা ভোগ করিতেছি । বক্তা যে দাসপ্রথার জন্য যমুর উপর । বিষম কটাক্ষপত করিপ্লাছম, এখন তাহার অর্থ সুগম হইবে । মনে কর একটা পরিবারে কেছ ধনোপার্জনে কেহ রন্ধন ও সস্তানপ্রতিপালনে কেচু অতিথি ও. দেব | সেবায় ব্যাপৃত। সমস্ত কাৰ্য্যই সংসারের অপরিহার্য্য ও হিতকর । কিন্তু এই সমস্ত ব্যতীত আরও সামান্য কতকগুলি কার্য অবশিষ্ট থাকে। সেই গুলির উপর অর্জক প্রতিপালক প্রভৃতির খানিকট অর্থসিদ্ধি নির্ভর করে। সেই সামান্য কাৰ্য্য যাহারা করে তাহারাই দাস । অথবা ব্যাখ্যা এই জনা পারি- ; প্রতিবাদ । ర్ఫి ছলে এরূপও বলা যায় তাহারা পারিবারিক অর্থসিদ্ধির সামান্য কিন্তু অপরিহার্ষ্য সছায়। শূদ্রের ব্রাহ্মণদিগের কেবল ব্রাহ্মণদিগের কেন সামাজিক উন্নতিসাধনে উদ্যত ব্রাহ্মণ প্রভৃতি তিন বর্ণেরই দাস বা অপরিহার্ষ্য সস্থায় ছিল। প্রকৃতির উল্লিখিত মেই প্রতিকুলতার মধ্যে,স্পষ্ট কথায় সেই চুৰ্দ্দিন, র্যাহারা জনসমাজের সৰ্ব্বাঙ্গীণ উন্নতিসাধনে বদ্ধপরিকর হইয়াছিলেন,তাহাদের রক্ষার এবং জীবনে পায় ও গৃহকার্স্যে সঙ্গায়তার একটা সদ্ব্যবস্থা না থাকিলে এখন ধে এই ভারত জ্ঞান ধৰ্ম্ম ও সভ্যতার সৰ্ব্ববিজয়ী পঃ * বক্ষোপরি বহন করিতেছে, বর্তমানের এই গৌরবের দৃশ্য বোধ হয় আমরা দেখিতে পাইতাম না। সীমের নিয়ম জনসমাজের প্রথমাবস্থায় উপযোগী নয়, কেবল প্রথমাবস্থায় কেন, কোন কালেই ইহার উপযোগিতা নাই। এই উচ্চণী ভাব চিরকাল চলিয়া আসিয়াছে এবং কার্য্যসৌকর্থ্যের নিমিত্ত চিরকালই চলিবে । দেখ আমাদের এই প্রশস্ত ধৰ্ম্মক্ষেত্র ব্রাহ্মসমাজে কি হইতেছে । আমরা যখন ব্রহ্মেপাসনার জন্য সমাজগুহে উপবিষ্ট হই, তখন বহুসংখ্য লোক আমাদের পরিচারণার জন্য কেন নিযুক্ত থাকে ? কেহ পাখা টানিয়েছে, কেছ গোলযোগ থামাইবার জন্য ব্যগ্র আছে, এবং কেহ বা আমাদের পরিশ্রান্ত দেহ নির্বিঘ্নে স্বস্থানে পৌছিবার জন্য গাড়ির বন্দোবস্ত করিতে থাকে । কেন ? আমরা তো জ্ঞান ও সভ্যতার মধ্যে সাম্যের নিয়ম শিক্ষা করিয়াছি ? ঐ সকল শ্রমজীবিদিগেরও তো আত্মা ও জ্ঞান ধৰ্ম্ম আছে ? তীস্থার কেন ব্রহ্মোপাসনার সময় আমাদের সহিত যোগ দেয় ন! ? না, তাহ অসম্ভব, তাহার। আমাদের পরিচারণায় নিযুক্ত না থাকিলে আমাদের ধৰ্ম্মসাধনের ব্যাঘাত হয়।