পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (একাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

، : ه هند پ;tی: সাধু সচ্চরিত্র অপেক্ষা, অসাধু অত্যাচারীর ংখ্যাই অধিক পরিমাণে দৃষ্ট হইয়া থাকে। এখন সংগ্ৰমী অপেক্ষ, স্বেচ্ছাচারীরই দল, এখন মিতাচারী অপেক্ষ, বিলাসীর সংখ্যাই অধিক, এখন ব্রহ্ম-জিজ্ঞাস্থ অপেক্ষ, ধৰ্ম্ম-দ্রোহীর এবং শাস্ত সুশীল অপেক্ষা, উগ্র উদ্ধত লোকের ও স্বচিস্তা ও স্বাবলম্বন-প্রিয় মনুষ্য অপেক্ষ পরমতানুবষ্টী এবং পরামুকারী ব্যক্তির পরিমাণ অধিকতর বলিয়। প্রতীয়মান হয়, সুতরাং যে যে কারণে জন-সমাজ উচ্ছিন্ন হুইয়া থাকে, ভারতে প্রায় সে সকল বিষ বৃক্ষের বীজ বিরোপিত হইয়াছে আমারদের যথার্থই কি কেহ নেতা মাই, যথার্থই কি আমারদের উপরে অধৰ্ম্মের দণ্ডদাতা, পুণ্যের পুরস্কৰ্ত্ত স্বরূপ কোন রাজা নাই, ভারতের হৃদয়বিদারক দুঃখক্লেশে ও গগনভেদী রোদন বিলাপে সকলেই কি উদাসীন ? বিষয়-লোলুপ পাপপরবশ স্বার্থপর মনুষ্য, মনুষ্যের দুঃখ-দুর্দশায় উদাসীন থাকিতে পারে, কিন্তু যিনি “সসেতুর্বিদ্ধতিরেষাং লোকানামসম্ভেদায়” যিনি লোক-ভঙ্গ নিবারণার্থে সেতু-স্বরূপ হইয়। সমুদায় ধারণ করিতেছেন, যিনি স্বনি"াল শাস্তির উদ্দেশে স্বয়ং ধৰ্ম্মের প্রবর্তক হয়েন” সেই অনাথবৎসল অকিঞ্চন-গুরু ঈশ্বর কখনই উদাসীন নহেন । পিতা, শক্তি সামর্থের অল্পতা নিবন্ধন সস্তান সন্তস্তিকে স্বীয় বশে না রাখিতে পারেন, কিন্তু পূর্ণশক্তি পূর্ণজ্ঞান পরম পিতা, অনায়াসেই সমগ্ৰ ব্ৰহ্মাণ্ডকে কল্যাণ-পথে সঞ্চালন করিতেছেন। মাতা, অজ্ঞতা বা অপটুতা বশত সংসারের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারেন, কিন্তু পরম মাত পরমেশ্বর তাহার অপার স্নেহ-গুণে অযুত অগণ্য পুত্ৰ-কন্যাকে অক্লেশেই প্রেমালিঙ্গনে আবদ্ধ করিয়া রা হুগলী দশম সাম্বৎসরিক ব্রাহ্মসমাজ N)(& খিতেছেন। স্বার্থ অন্ধ হইয়া প্রজার সৰ্ব্বনাশের প্রতি উদাসীন থাকা রাজার পক্ষে অসম্ভব নহে, কিন্তু সেই রাজ-রাজেশ্বর সেই সত্য-কাম মদল-স্বরূপ মহান্‌ ঈশ্বর, প্রজাবগের মধ্যে কদাচই পাপকে জয়-যুক্ত হইতে অধৰ্ম্মকে একাধিপত্য করিতে দেন ন । গ্রীষ্মের আধিক্য বশত জীব-জন্তু প্ৰপীড়িত হইতে আরম্ভ হইলে যেমন অচিরাং মেঘালয়, বর্ষিত হইয়া চারিদিক শীতল করিয়া দেয় বায়ুসাগর দূষিত ও বিষাক্ত হইয়া প্রাণিপুঞ্জের পক্ষে অনিষ্ট ও অস্বাস্থ্যকর হইয়। পড়িলে যেমন ঘন ঘন বিদ্যুতাগ্নি মিক্ষিপ্ত হইয় তাহ শোধিত ও সংস্কৃত করিয়া দেয়, মনুষ্য-সমাজ মধ্যে তেমনি পাপ তাপ প্রভৃতি প্রবিষ্ট হইয়া তাহাকে অস্তঃসারশুন্য করিয়া ফেলিতে আরম্ভ করিলে, ঈশ্বর তেমনি বিশুদ্ধ ধৰ্ম্মাগ্নি প্রেরণ করত জন সাধারণের বিস্তু-বিপত্তি বিনাশ-পূর্বক প্রকৃত নব-জীবন সঞ্চার করেন, অবনত জাতির পুনরুত্থানের পথ প্রমুক্ত করিয়া দিয় তাহারদিগের নিৰ্ব্বাণপ্রায় আশাপ্রদীপকে প্রজ্জ্বলিত করিয়া দেন । ইহ। কেবল বাক্য বা কল্পনা-মাত্র নহে, ইহু। প্রত্যক্ষ পরীক্ষা-সিদ্ধ ব্যাপার। এই নিগৃঢ়. বাক্যের প্রমাণ সংগ্রহের জন্য অতীত কালের প্রতি দৃষ্টিপাত করিবার প্রয়োজন নাই, দেশ দেশাস্তর গমন করিবারও আবশ্যক করে না। একবার যদি আমরা এই বঙ্গের প্রতি, ভারতের প্রতি, দৃষ্টিপাত করি, তাহা স্থইলেই ইহার জাগ্ৰত জ্বলন্ত প্রমণ সকলেরই প্রত্যক্ষগোচর হইবে । দেখ, সকলে প্রত্যক্ষ দেখ, ভারতের অবনতি বঙ্গের অবসন্ন অবস্থায়, ঈশ্বর আমারদের মধ্যে ব্রহ্ম-জ্ঞানরূপ স্বগীয় অগ্নি প্রেরণ করিয়াই আমারদিগকে রক্ষা করিয়াছেন । তিনি স্বয়ংই কর্ণধার হইয়া কেমন বিচিত্র কৌশলে মগ্ন-প্রায় তরণীকে উদ্ধার করিয়াছেন।