পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృeSలి to . . .o. হন, ও চাতুরী প্রকাশ করেন তবে উভয়েই সেই অধৰ্ম্ম জন্য প্রস্তরময় নৌকায় আরোহীর ন্যায় পাপসাগরে নিমজ্জিত হয়েন । আমাদিগের আর্য্যাবর্তে যাবৎ গুরু শিষ্যের পবিত্র ভাব বিরাজিত ছিল তাবৎ এই দেশের সৌভাগ্য সূৰ্য্য অস্তমিত হয় নাই। হায় । আজকাল সেই শুদ্ধ ভাব এই পবিত্র ভারতভূমি হইতে অপসারিত হইয়া এরূপ বিপরীত দিকে ধাবিত হইয়াছে যে তাহার অনিষ্ট ফল দ্বারা দেশ ছার খার হইতেছে । গুরু শিষ্যের পবিত্র ভাবকে আজকাল বল্লভাচারী ও নারায়ণ স্বামী মহাশয়েরা যে কতদূর অপবিত্র করিয়াছেন তাহ অনেকেই অবগত অাছেন । আজকাল গুরু শিষ্য বলিলেই রাজা প্রজার সম্বন্ধ বুঝায় ; এমন কি বঙ্গদেশে যখন দীক্ষা গুরু মহাশয়ের প্রবাসে বাহির হন তখন স্পষ্টই বলিয়া থাকেন যে মহলে যাইতেছি । তন্ত্রে এক স্থলে লিখিত আছে

  • বহবো গুরুবঃ সস্তি শিষ্যবিত্তাপহারকাঃ । দুৰ্লভঃ সদৃগুরু দেবি শিষ্যসন্তাপহারকঃ ॥”

অর্থাৎ হে দেবি ! এই সংসারে কেবল শিষ্যের ধন হরণ করিয়৷ থাকেন এইরূপ হরণে সমর্থ এরূপ সৎ গুরু অতি দুর্লভ। বলিতে কি আমাদিগের দেশে দীক্ষা গুরুদিগের মধ্যে সদৃগুরু নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। হায় ! যে গুরুর এক সময় নিষ্কাম অন্তঃকরণের পরাকাষ্ঠী দেখাইয়া গিয়াছেন আজ র্তাহাদেরই ংশধরেরা দীন দরিদ্র শিষ্যদিগের নিকট হইতেও ছল, বল ও ভয় প্রদর্শন পূর্বক অর্থ গ্রহণ করিতে সঙ্কুচিত নহেন। যে শিষ্যের পুত্র কন্যাস্থানীয় তাহাদিগের সহিত অসদ্ব্যবহার করিতেও লজ্জিত তত্ত্বৰােধিনী পত্রিক محمد === নছেন। যেরূপ কুলীন সন্তানের অকু লীন হইলেও মুখ লোকের নিকট কুলীন বলিয়া খ্যাত হন তদ্রুপ দীক্ষা গুরু গুণহীন হইলেও মুখলোকদিগের নিকট ইষ্টদেব বলিয়া পরিচিত হইয়। থাকেন—বিদ্যাহীন বংশধর দীক্ষাগুরু মহাশয়েরা দেখিলেন যে আর তাহার বিদ্যা বা তপোবলে বংশমর্য্যাদা রক্ষ। করিতে সমর্থ নহেন কাজেই কুলমৰ্য্যাদা রক্ষার্থে কৌশল অবলম্বন করিতে বাধ্য হইলেন। কাজেই তাহারা স্বার্থের বশীভূত হইয়া শিষ্যদিগকে বুঝাইতে লাগি লেন “গুরু ছেড়ে গোবিন ভজে সে পাপী নরকে মজে” । এদেশের বিদ্যাহীন মনুষ্যেরাও সেই সমস্ত বেদ বিরুদ্ধাচরণকারী ইষ্ট দেবতাদিগের বাক্যে বিশ্বাস করিয়া যার পর নাই কষ্ট পাইতেছেন। র্তাহারা জানেন না যে আমাদিগের শাস্ত্রে স্পষ্টাক্ষরে লিখিত আছে যে “যুক্তিযুক্ত মুপাদেয়ং বচনং বালকাদপি” “অন্যৎ তৃণ মিব ত্যজ্যমপু্যক্তং পদ্মজন্মন ॥ ইহার তাৎপৰ্য্য এই যে কেহ যদি যুক্তিযুক্ত বাক্য বলে তথাপি গ্রহণীয় এবং শঠগুরুই অধিক ; কিন্তু শিষ্যের সন্তাপ । যদি সাক্ষাৎ পদ্মযোনি ব্রহ্মাও অযুক্ত বাক্য প্রয়োগ করে তবে তাহাকে তৃণের ন্যায় অগ্রাহ করিবে । পরিশেষে বক্তব্য এই ষে যতদিন আমাদিগের দেশে বিশুদ্ধ সত্য এবং জ্ঞানের মর্য্যাদা অবগত হইয়। গুরু ও শিষ্য উভয়েই ধৰ্ম্ম পথে না চলিবেন ততদিন কখনই আমাদিগের আধ্যাত্মিক উন্নতি হইতে পারিবে না। ।