পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

च4३ॉग्नर्थ sv** ধৰ্ম্মসাধন S8S ভোগ্য উপকরণ সমস্তই সংগৃহীত কিন্তু নিজে ভোগবিলাসের বিষয় হইতে স্বতন্ত্র। মনুষ্য হইতে পশুপক্ষ্যাদি পৰ্য্যন্ত সকলেই তাহার গৃহের অতিথি। তাহার দেহধারণোপযোগী যৎকিঞ্চিৎ দেব্য ব্যতীত আর সমস্তই অপরের জন্য। ঈশ্বরের আদেশে অপরের সেবার জন্যই সে পবিত্র জীবন বহন করিত। সে এইরূপ সংযত হইয়৷ নিজের সুখ দুঃখ তুচ্ছ করিয়া এমন ধনের অধিকারী হইত, যাহা সম্রাটের রাজভাওরে নাই, ত্রিভুবনের কুত্ৰাপি এমন কিছু নাই যাহার সহিত তাহার অবস্থার বিনিময় হইতে পারে । কিন্তু বর্তমানে শিক্ষা বিভিন্ন দিকে পরিবর্তিত হইয়াছে। যাহাতে আত্মসংযম স্বাৰ্থত্যাগ অভ্যাস হইতে পারে এরূপ শিক্ষা আর নাই। ইহা অবশ্যই স্বীকার্য্য যে এই স্বাৰ্থত্যাগ শিক্ষা করিবার জন্য সেই পূৰ্ব্বকার আরণ্যক প্রণালী এক্ষণে পূর্ণমাত্রায় প্রচলিত করা একপ্রকার অসম্ভব কিন্তু দেশ কাল অবস্থা বুঝিয়া তাহার যতটুকু পারা যায় চেষ্টা করিতে হইবে। ফলত ত্যাগী না হইলে ধৰ্ম্ম সাধন কখনই ফলপ্রদ হইবে না । আমরা য়ে ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিয়াছি তাহা ঋষিসেবিত সেই প্রাচীন ধৰ্ম্ম । যখন বৈদিকক্রিয়াকলাপের নিতান্ত আতিশয্য হইয়া উঠিল, তখন ধৰ্ম্মের কোমল প্রাণ রক্ষা করিবার জন্য উপনিষদকার ঋষিগণের কণ্ঠ যাগযজ্ঞের আড়ম্বর ভেদ করিয়া উচ্চে উঠিয়াছিল। আবার যখন অজ্ঞানান্ধকারের মোহের ভিতরে সেই ধৰ্ম্ম ভস্মাচ্ছাদিত বহ্লির ন্যায় প্রচ্ছন্ন হইয়। পড়িয়াছিল তখন ব্রাহ্মধৰ্ম্ম উত্থিত হইয়া সেই ভস্ম অপসারিত করিয়া দিল । এখন সমুদয় পৃথিবী সেই পবিত্র অা লোকে উদ্ভাসিত। অতএব আমরা যখন পৈতৃক ধৰ্ম্মধনের অধিকারী তখন র্তাহাদের সাধনপথ কেন পরিত্যাগ করি। এক সময় ঈশ্বরোপাসনায় বাক্যের অধিক আড়ম্বর হইয়াছিল বলিয়া উপনিষদকার বলিলেন “নায়মাত্মা প্রবচনেন লভ্যঃ” বাক্যে ঈশ্বরকে পাইতে প্রয়াস করিও না, তাহাকে বাক্য দ্বারা লাভ করা যায় না। তবে কি উপ।য়ে তাহীকে লাভ করা যায়,প্রত্যুত্তরে বললেন “মিত্যেবং ধ্যায়থ” ওঙ্কার সাধনা কর, দিনে নিশীথে ; ওঁঙ্কার জপ কর। “অন্য বাচো বিমুঞ্চথ” অন্য বাক্য সঙ্ক পরিত্যাগ কর । এই জপ পরবর্তী সময়ে রহিল বটে কিন্তু কেহই অন্তরের সহিত জপ করে না দেখিয়া প্রেমিক তুলসীদাস ক্রোধে অধীর হইয়া বলিয়া উঠিলেন, যে কেবল মাত্র জপমালা ঘুরাইলে জপ হইবে না, ঈশ্বরকে হৃদয়ে আসীন বুঝিয়া একতানে তাহাকে স্মরণ কর তবেই সিদ্ধ কাম হইবে । কিন্তু বলিতে কি, আমাদিগের মধ্যেও অtবার সেই ঘোর ছুর্দিন আসিয়া উপস্থিত । বাক্যের আড়ম্বর বক্তৃতার ছটা ধৰ্ম্মসাধনের বিষম ব্যাঘাত ঘটাইতেছে । ফলত প্রকৃত সাধনের অভাবে বিশ্বাস ও আচরণে পার্থক্য ক্রমিকই পরিলক্ষিত হইতেছে। বাক্যাড়ম্বর ব্যতীত প্রকৃত সাধনার পদ্ধতিজ্ঞানেও অনেকে উদাসীন। এক্ষণে সমস্ত চটুলতা দূর করিয়া পবিত্র হৃদয়ে ব্যাকুল চিত্তে “ওঁমিত্যেবং ধ্যায়থ” ওঁকার ধান কর । এই সৰ্ব্বোচ্চতম সাধনা প্রভাবে ঈশ্বরজ্ঞান প্রবৰ্দ্ধিত হইবে,চরিত্রের নৈৰ্ম্মল্য স্বরক্ষিত হইবে, পবিত্র ব্রাহ্মধৰ্ম্মের মুখ উজ্জ্বল হইবে, এবং ঈশ্বরকে লাভ করিয়া সকলে আপ্তকাম হইতে পারিবে ।