পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>68 তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা আলোড়িত করিয়া যেখানে যাহা সুন্দর ও রমণীয় বস্তু পাওয়া যায় তাহ সংগ্ৰহ করত যে তাজ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল, যাহার নিৰ্ম্মাণে লঙ্কার নীলকান্ত, লোহিত সাগর সস্তৃত প্রবালরাজি, আরবের কণিলীয়ন, চীনের স্ফটিক, গোয়ালিয়রের অয়স্কান্ত, গোলকুণ্ডার অতুল্য হীরকভাণ্ডারস্থ হীরকরাজি, জয়পুরের শ্বেত মৰ্ম্মর ও আরও কত মূল্যবান দ্রব্যাদি দূরদেশদেশান্তর হইতে আনীত হইয়াছিল মনুষ্য তৎসমুদয় লইয়া কতই শিল্পনৈপুণ্যের পরিচয় দান করিয়াছে ; কিন্তু কে কবে পরিত্যক্ত খড়কুটা আহরণ করিয়া এমন আদর্শ শিল্প রচনা করিয়া ঈশ্বরের অসীম মহিমা প্রকাশ করিতে পারিয়াছে ? ঈশ্বরের মাহাত্ম্য বুঝিতে হইলে পুস্তক ছাড়িয়া, পাঠাগার ছাড়িয়া, নিম্নশ্রেণীর প্রাণীগণের কার্য্য কলাপ পর্য্যবেক্ষণ কর, দেখিতে পাইবে ঈশ্বর কত মহৎ,র্তাহার কার্য্য কত কৌশলময়, তাহার প্রেম কত বিশ্বব্যাপী । Φημιαπun, অশোকের অনুশাসন । পঞ্চম অনুশাসন । দেবতাগণের প্রিয় রাজা প্রিয়দর্শী বলিতেছেন যে, আমার রাজ্যাভিষেকের ছাবিবশ বৎসর পরে অামি পশ্চাল্লিখিত প্রাণি সকলের হত্যা নিবারণ করিয়াছি ; শুক শারিকা, চক্ৰবাক, হংস, নন্দিমুখ,শ্বেত কপোত, গ্রাম্য কপোত, নিরস্থিক মৎস্য এবং যে সকল চতুষ্পদ জন্তু ব্যবহারোপযোগী কিন্তু ভক্ষ্য নহে—যথা গর্ভবতী দুগ্ধবর্তী গাভী, বা যাহার ছয়মাসের অনধিক বৎস আছে সেই ছাগী, শূকরী ও মেষ এই সকল জন্তুকে কেহ বধ করিতে পারিবে না। কেহ কুকুটকে নপুংসক করিতে পারিবে না। কেহ কোনও প্রাণী দগ্ধ করিতে পারিবে না। কেহ অনবধানত পূর্বক বা প্রাণিগণের বিনাশের জন্য বনে অগ্নি লাগাইতে পরিবে না। এক প্রণীকে বধ করিয়া অন্য প্রাণীর পুষ্টি সাধন করিবে না। চাতুর্মাস্য কালে তিষ্য বা পুনৰ্ব্বস্ব নক্ষত্রে পূর্ণিমা অমাবশ্য বা কৃষ্ণপক্ষীয় প্রতিপৎ প্রভৃতি তিথিতে কেহ কোনও মৎস্য মারিতে বা বেচিতে পারিবে না । এই সকল দিনে কেহ মৃগয়া করিতে পারিবে না, পুস্কারণীতে মৎস ধরিতে পারিবে না বা কোনও প্রাণিবধ করিতে পারিবে না। শুক্ল পক্ষীয়, অষ্টমী চতুর্দশী ও পূর্ণিমার দিনে, তিষ্য ও পুনৰ্ব্বস্থ নক্ষত্রের সহিত পূর্ণিমার যোগ কালে তৎপর দিনে এবং চাতুর্মাস্যের সময়ে কেহ ষণ্ড ছাগ, মেষ ও শূকর শাবকাদির অঙ্গহানি করিতে পারিবে না । তিষ্য ও পুনৰ্ব্বস্থ নক্ষত্র সংযুক্ত পূর্ণিমা তিথিতে, চাতুর্মাস্যের দিনে ও কৃষ্ণ পক্ষীয় প্রতিপৎ তিথিতে কেহ অশ্বাদির গাত্রে তপ্ত লৌহ শলাকা দ্বারা কোনও রূপ চিছু দিতে পারিবে না। আমার রাজ্যাভিষেকের ছাব্বিশ বৎসর কালে আমি ছাব্বিশ জন কারাবাসীকে মুক্ত করিলাম । ৬ ষষ্ঠ অনুশাসন। দেবতার প্রিয় প্রিয়দর্শী বলিতেছেন যে, আমার রাজ্যাভিষেকের দ্বাদশ বৎসর পরে অামি সকলের হিত ও সুখার্থে এই সমস্ত অনুশাসন প্রচার করাইলাম। আমার বিশ্বাস লোকে ইহা দ্বারা উপকার পাইবে এবং বিবিধ প্রকারে ধৰ্ম্মোন্নতি লাভ করিবে । নিকটস্থ দূরস্থ ও আত্মীয় প্রজাবর্গের মুখ বৃদ্ধির নিমিত্ত আমি নানা উপায় অবলম্বন করিলাম। যাহাতে অনুশাসনোল্লিখিত বিষয় সকল যথাযথ রূপে সম্পন্ন হয় তজ্জন্য