পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6 لاعاد اميمه চতুঃষষ্টিতম সান্ধৎসরিক ব্রাহ্মসমাজ ২১৩ ജ অধিকাংশ স্থলে দ্বৈতবাদ দেখা যায়— তাহার দুই একটা দৃষ্টান্ত দিলেই যথেষ্ট হইবে । উপনিষদের ঋষির বলিতেছেন “তমৗখরাণাং পরমং মহেশ্বরং তং দেবতানাং পরমঞ্চ দৈবতং । পতিং পতীনাং পরমং পরস্তাৎ বিদাম দেবং ভূবনেশ

  • মীড্যং ॥” যিনি সকল ঈশ্বরের পরম মহেশ্বর, সকল

দেবতার পরম দেবতা, সকল পতির পতি সেই স্তবনীয় ভুবনেশ্বরকে আমরা জ্ঞাত হই। এই সকল কথা সেই দেবদেব পতির পতি পরমেশ্বরেতেই প্রযুক্ত হইতেছে— জীবাত্মার প্রতি প্রযুক্ত হইতে পারে না— এ বিষয়ে কি কোন সন্দেহ থাকিতে পারে ? তাহারা আরো বলিতেছেন— “দ্ধ। সুপর্ণ সযুজা সখীয়া সমানং বৃক্ষংপরিষস্ব জাতে । তয়োরন্যঃ পিপ্পলং স্বাদ্বত্ত্যনগ্নয়ন্যোছভিচাকর্ষীতি ॥” দুই সুন্দর পক্ষী একবৃক্ষ অবলম্বন করিয়া রহিয়াছেন—ৰ্তাহারা সৰ্ব্বদা একত্র থাকেন এবং উভয়ে পরস্পরের সখা ; তন্মধ্যে একজন সুখেতে ফল ভক্ষণ করেন—অন্য নিরশন থাকিয়া কেবল দর্শন করেন । ইহাতে যদি দ্বৈতভাব না থাকে তবে দ্বৈতভাব কাহাকে বলে জানি না। সখা অর্থেই দুই বিভিন্ন পুরুষ বোঝায়—একজন ফলভোক্তা অন্য জন ফলদাতা সাক্ষী পুরুষ। উপনিষদে আরো আছে

  • সমানে বৃক্ষে পুরুষো নিমগ্নে। ইনৗশয়া শোচতি মুহ্য
  • ाiन8 ॥ জুষ্টং যদা পশুত্যন্যমীশমস্য মহিমানমিতি বীতশোক:৷”

যদিও একই বৃক্ষে অবস্থিত তথাপি তাহার মধ্যে একজন আত্মহারা মুহমান হইয়া শোক করিতে থাকেন কিন্তু যখন সে পূজনীয় ‘অন্যমীশং অন্য ঈশ্বরকে ও ষ্ঠাহীর মহিমাকে দেখে তখন বীতশোক इम्न । ” পরে অদ্বৈতবাদকে সমর্থন করিতে গিয়া তাহার নিকৃষ্ট আকার মায়াবাদ অবতীর্ণ হইল। মায়াবাদের সার মৰ্ম্ম এই যে বাহ্য জগৎ সকলি অসত্য মায়াময় – জীব মায়াপাশে বেষ্টিত। যেমন রজুতে সপ ভ্ৰম তেমনি অবিদ্যার প্রভাবে অtমরা অসত্য মায়াময় জগৎকে সত্য বলিয়া জ্ঞান করি । ব্রাহ্মধৰ্ম্ম তাহ বলেন না । এই জগৎ সংসার যদি স্বপ্নময় মায়াময় হয় তবে আমাদের বাচিয়া থাকতে সুখ কি—জীবনের কার্য্য সকলি বৃথা । ব্রাহ্মধৰ্ম্মের উপদেশ এই যে ঈশ্বরকে প্রীতি কর এবং তাহার প্রীতিকর জানিয়া নিজ নিজ কৰ্ত্তব্য কার্য্য সম্পাদন কর । এ সংসার যদি মায়া হয় তবে কাহার জন্যই ব। কাৰ্য্য করিব, কেনই বা কাৰ্য্য করিব ? একদিকে পৌত্তলিকতা, একদিকে অদ্বৈতবাদ ও মায়াবাদ, এই দুই পৰ্ব্বতের মধ্যস্থিত স্রোতের মধ্য দিয়া ব্রাহ্মধৰ্ম্মকে বঁাচাইয়া লইয়া যাইতে হইবে । আমাদের সনাতন সত্যধৰ্ম্মে যে কলঙ্ক আসিয়া পড়িয়াছে তাহা মোচন করিয়া প্রকৃত রত্নটিকে উদ্ধার করাই ব্রাহ্মধৰ্ম্মের উদ্দেশ্য। পরে শ্রদ্ধাস্পদ শ্ৰীযুক্ত হেমচন্দ্র চক্রবর্তী গম্ভীর স্বরে সকলকে এইরূপে উদ্বোধিত করিলেন । অদ্য এই শুভ মাঘের একাদশ দিবসে যাহার পূজা-মহোৎসব, র্তাহাকে একবার স্মরণ কর—তিনি আমাদের পরমারাধ্য পরম দেবতা—তিনি আমাদের অন্তরতম পরমাত্মা । সমস্ত বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ড র্তাহার সত্তাতে পরিপূর্ণ। র্তাহার জ্যোতি রজনীর অন্ধকার অপসারিত করিয়া আকাশে দীপ্তি পাইতেছে—তাহার জ্যোতি ভক্তজনের মুখমণ্ডল হইতে বিনিগত হইয়। উৎসব-মন্দিরে জীবন সঞ্চার করিতেছে ।