পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• ०७, कश्र.* छीन 8२ তত্ত্ববোধিনী পত্রিক । শুরি সহায়তা করে এ জন্যই গ্রহণীয়। ধর্মের উদ্ধার করেন । এই ভারতভূমিতে ভগবান মনু বলিয়াছেন । , যদি যোগেশ্বর শ্ৰীকৃষ্ণ, সাধু নানক, কবির “যমান সেবেত সততং ন নিত্যং নিয়মান বুদ্ধঃ। যমান পতত্যকুৰ্ব্বাণে নিয়মান কেবলান ভজন ॥ অদ্ভিৰ্গাত্রাণি শুধ্যক্তি মনঃ সত্যেন গুধ্যতি । বিদ্যাতপোভ্যাং ভূতাত্মা বুদ্ধিজ্ঞানেন শুধাতি।” অর্থাৎ সৰ্ব্বদা যমই অবলম্বন করিবে কেবল নিয়ম অবলম্বন করিবে না এরূপ নহে, যমাচরণ পরিত্যাগ করিয়া কেবল নিয়মাচরণ করিলে পতিত হইতে হয়। জল দ্বারা বাহিরের স্থল শরীর সত্যাচার দ্বারা মন, ধৰ্ম্মানুষ্ঠান দ্বারা জীবাত্মা ও বুদ্ধি জ্ঞান দ্বারা শুদ্ধ হয় । উপরোক্ত মতে ব্রাহ্মেরা কাৰ্য্য করিয়া থাকেন । পুনশ্চ মদ্য পানকর ব্রাহ্মধৰ্ম্মের বিরোধী। অতএব ব্রাহ্মদিগের বিরুদ্ধে যে লোকের অন্যায় দোষারোপ করেন তাহা সম্পূর্ণ অলীক তাহাতে আর কিছুমাত্র সন্দেহ নাই । আমাদিগের দেশে অনেকের অার একটা সংস্কার অাছে যে মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় এই ব্রাহ্মধৰ্ম্মের প্রথম স্বষ্টিকর্তা । আমি পূর্বেই আপনাদিগকে বলিয়াছি যে এই ধৰ্ম্ম পূৰ্ব্বতন আর্য্য ঋষিগণ যাজন করিতেন । রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মধৰ্ম্ম সম্বন্ধে একটাও নূতন মত প্রচার করেন নাই। জগতের ইতিহাসে দেখিতে পাওয়া যায় যে যখন স্বষ্টিতে ধৰ্ম্মের লোপ ও অধৰ্ম্মের প্রাচুর্ভাব হয় তখনই মহাত্মারা জগতে আবিভূত হইয়া সত্যধৰ্ম্ম প্রচার করিয়া থাকেন । শাস্ত্রে লিখিত আছে “পরোপকারায় সতাং বিভূতয়ঃ” অর্থাৎ পরোপকার জন্যই সাধু পুরুষেরা তনমন ও ধন হইয়া থাকেন। ঈশ্বর পরম দয়ালু এই জন্যই অত্যন্ত দুঃখের সময় এরূপ মহাত্মাদিগকে জগতে প্রেরণ করিয়া সত্য দাস, দাছ, রাজা রামমোহন রায়ও ঐদয়ানন্দ সরস্বতীর আবির্ভাব ন হইত তবে কখনই সেই সনাতন ধৰ্ম্ম আজ পর্য্যন্ত জীবিত থাকিতে পারিত না। আমি এই ৷ সমস্ত মহাত্মাদিগকে অবতার বলি না । ইহঁার সাধুপুরুষ। ঈশ্বর কখন অৰতার রূপে আবিভূত হন না । ঈশ্বর সর্বব্যাপীও অনন্ত । তিনি কখনই অম্ভযুক্ত শরীরী হইয়। জন্মগ্রহণ করেন না । তিনি শরীররহিত অতএব তাহাকে শরীরযুক্ত কল্পনা করা অজ্ঞানের কার্য্য। বেদাদি সত্য শাস্ত্রের মতেও যে ঈশ্বরের অবতার নাই তাহার বিশেষ প্রমাণ পাওয়া যায়—যজুৰ্ব্বেদে লিখিত আছে সপৰ্য্যগাছুক্রমকায়মত্রণমস্নাবিরং শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্। কবিৰ্মনীষী পরিভূঃ স্বয়স্থর্যাথাতথ্যতোইথান ব্যদধা চ্ছাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যং ॥ অর্থাৎ সেই সৰ্ব্বব্যাপী পরব্রহ্ম নিৰ্ম্মল, অবয়ব বা শরীর রহিত, শিরা ও ব্রণ রহিত শুদ্ধ ও পাপরহিত হয়েন । তিনি সর্বদশী ও মনের নিয়ন্ত । তিনি সকলের শ্রেষ্ঠ ও স্বপ্রকাশ । তিনি সৰ্ব্বদা প্রজাগণের যথোপযুক্ত সমস্ত অর্থ বিধান করিয়া থাকেন। ফল কথা মনুষ্যরূপে ঈশ্বর যে অবতীর্ণ হন না তাহাতে আর সন্দেহ নাই। পরিশেষে বক্তব্য এই যে এই সনাতন ব্রাহ্মধৰ্ম্ম গ্রহণ করিতে হইলে মনুষ্যকে সংসার অর্থাৎ স্ত্রী পুত্রাদি পরিত্যাগ করিতে হয় না। প্রকৃত ব্রাহ্মকে কৰ্ত্তব্যের অনুরোধে সমস্ত কাৰ্য্যই করিতে হইবে । নিষ্কাম কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করাই ব্রাহ্মধর্মের সাধন। পূর্বকালে আৰ্য্য ঋষিগণ স্ত্রী পুত্রাদি পরিত্যাগ পূবর্বক ধৰ্ম্মযাজন করিতেন না। বড় বড় ঋষিদিগের স্ত্রী পুত্রাদি সমস্তই ছিল।