পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*-*. - পাপ প্রবৃত্তি সকলের ধ্বংশ হয়—তাহাও ভাল। তবে কি সেই প্রাচীন শাস্ত্রকারগণ বুঝিতেন না যে শরীরনাশের সঙ্গে যেমন অসৎপ্রবৃত্তির হ্রাস হয়, সেইরূপ সৎকাৰ্য্য করিতেও অক্ষমতা জন্মে ? ইহা বুঝিয়াই তাহারা বলিতেছেন “বশে ক্লত্বেন্দ্রিয়গ্ৰামং সংযম্য চ মনস্তথা । সৰ্ব্বান সংসাধয়েদখানক্ষিম্বনৃ যোগতস্তমুম্ ॥” যাহাতে শণীর ক্ষীণ না হয়, এমত উপায় । দ্বারা মন ও ইন্দ্রিয় সকলকে বশীভূত করিয়া সৰ্ব্বার্থ সাধন করিবেক । বিষয়সুখ উপভোগ করিলেই অন্যায় কৰ্ম্ম হয় ন। “চক্ষু কৰ্ণ প্রভৃতি জ্ঞানেন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞানোপার্জন ও হস্তপদ প্রভৃতি কৰ্ম্মেন্দ্রিয় দ্বারা কৰ্ম্মানুষ্ঠান করিয়া লোকলো কান্তরগামী আত্মা জ্ঞান ও ধৰ্ম্মে উন্নত হইতে থাকিবে, এই জন্য পরমেশ্বর দুইপ্রকার ইন্দ্রিয় প্রদান করিয়াছেন, কিন্তু তাহার এমনি করুণা যে, তাহার সঙ্গে বিময়সুখ আস্বাদম করিয়া ও তৃপ্তিলাভ করিতে অনুমতি দিয়া রাখিয়াছেন । ইন্দ্রিয় লাভের প্রধান উদ্দেশ্য বিস্মৃত হইয়। কেবল তাহার আনুষঙ্গিক ফলস্বরূপ বিময়সুখের উপভোগেই নিবৃত হইয়া থাকে, সেই ব্যক্তিই অপগতি প্রাপ্ত হয় ।” আবার র্যাহারা বলেন যে পাপী মনুষ্য ও ঈশ্বরের মধ্যে এক পুণ্যবান ব্যক্তিকে মধ্যবৰ্ত্তী বলিয়া স্বীকার করিলে পাপীর পাপ বিনষ্ট হইয়া যায়, তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিতে ইচ্ছা করি যে, আমি যদি পাপ করি, অপরে তাহার শাস্তি গ্রহণ করিবে কেন ? ইহাই কি ন্যায় বিচার ? তাই যদি হইত, তবে শতসহস্র ব্যক্তিকে মধ্যবর্তী মানিলেও পাপ করিলে আমরাই স্বয়ং তাহার জন্য আত্মগ্লানি ভোগ করি কেন ? পুণ্যের সময়ে আমরাই যেমন | | | ! "e ow, x etג আত্ম প্রসাদ উপভোগ করি, পাপের সময়েও আমরাই তেমন আত্মগ্রানি ভোগ করি। তবে আর অপর ব্যক্তি আমাদের পাপ গ্রহণ করিলেন কিরূপে ? এতক্ষণ প্রায়শ্চিত্তের একটী অঙ্গ অনুতাপের বিষয বলিয়া আসিলাম । প্রায়শ্চিত্তের অপর অঙ্গ পাপ হইতে বিরত হইয়া পুণ্যকার্য্যে প্রবৃত্ত হওয়া । মনুষ্য কখনও চুপ করিয়া থাকিতে পারে না ; হয় সে পুণ্যের পথে যাবে, নতুবা অপুণ্যের পথে যাবে ; পুণ্যে ও যাবে না, অপুণ্যেও যাবে না—একথা একেবারেই অসম্ভব । মনুষ্য কখনই নিৰ্ব্বিকারচিত্তে, সংসারের সহিত একেবারেই নির্লিপ্ত ভাবে থাকিতে পারে না । এই জন্য যখনই অনুতাপাগ্নি পাপরাশিকে ভস্মীভূত করিয়া দেয়, তখনই মনুষ্যের পুণ্যপথে গমনই শ্ৰেয়ঃ । প্রায়শ্চিভের দুইটি অঙ্গের মধ্যে “অনুশোচনা ঈশ্বরের নিয়মানুসারে উপস্থিত হয় ; অপর অঙ্গ মনুষ্যকে যত্বপূর্বক সম্পাদন কিন্তু যে ব(ক্তি । করিতে হইবে । সৰ্ব্বদা আপনাকে পরীক্ষা করিপেক এবং পাপ হইতে নিরক্ত হইবেক ও পাপদ্বারা আপনার যাহা কিছু অনিস্ট হইয়াছে পুণ্যকৰ্ম্ম দ্বারা তাহার পরিহার করিবেক ।” আমরা যে ঈশ্বরের প্রসাদে স্বাধীন ইচ্ছা পাইয়াছি, সেই স্বাধীন ইচ্ছার যেন অপব্যবহার না করি। অামাদিগের কর্তব্য যে আমরা আপন ইচ্ছায় মঙ্গলের দিকে যাই এবং মঙ্গলের দ্বারা অমঙ্গলকে পৃথিবী হইতে দূর করিয়া দিই। আমাদিগের ইহা একটা শ্রেষ্ঠ অধিকার যে আমরা পশুদিগের ন্যায় প্রবৃত্তি মাত্রেরই বশবর্তী না হইয়া, ভালমন্দ উভয়েরই পথ অনুসরণ না করিয়া ইচ্ছা করিলেই ভালর পথে যেতে পারি ; ইচ্ছা করিলেই পাপের দুর্গন্ধের পরিবর্তে পুণ্যের সুগন্ধ আনয়ন