পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/২৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

هاد داد t5 বলুহাটী ব্রাহ্মসমাজ ९२१ এই মর্ত্যধামবাসী লোকেরা ব্রাহ্মধৰ্ম্মের এক অতি মহান আশা আছে এই যে, এমন দিন আসিবে, যখন দণ্ডভয়ে নহে, কিন্তু আপনাদিগের হৃদয়ের প্রীতিতে ব্রহ্মের প্রিয়কাৰ্য্য সাধন করিয়া এখানেই স্বৰ্গ আনয়ন করিবে । এই আশা কিসের উপরে স্থাপিত ? ইহা একটা সুদৃঢ় বিশ্বাসের উপরে স্থাপিত। ব্রাহ্মধৰ্ম্ম স্পষ্টাক্ষরে ঘোষণা করিয়াছেন যে, “ব্রহ্মজ্ঞানরূপ স্বৰ্গীয় অগ্নি সকলেরই হৃদয়ে নিহিত আছে, সকলের অল্পতেই ব্রহ্মের অনন্ত মঙ্গলভাব অবিনশ্বর অক্ষরে লিখিত আছে । বিশ্বকার্য্যের আলোচনা দ্বারা তাহা প্রজ্জ্বলিত করিলেই অনন্ত মঙ্গলস্বরূপ ঈশ্বরকে দর্শন পাই । ব্রহ্মবিৎ ও ব্রহ্মবাদী হইবার জন্য দেশবিশেষ, কি কালবিশেষ কি জাতিবিশেষের অপেক্ষা নাই ।” এক কথায় এই, সকলেরই অন্তরে বৈরাগ্য ও বিবেকের মূল নিহিত আছে— । তাহাতে জলসিঞ্চন করিয়া তাহাদিগকে বৃক্ষ করিয়া তুলিতে হইবে । ব্রাহ্মধৰ্ম্মরূপ : জলসিঞ্চন করা ব্রাহ্ম সমাজের এক প্রধান কর্তব্য । ব্রাহ্মসমাজের ইহা কৰ্ত্তব্য বটে ; কিন্তু ব্রাহ্মসমাজ কি এই কৰ্ত্তব্য সাধনে প্রাণপণ চেষ্টা করিতেছেন ? ব্রাহ্মসমাজ যদি এই কর্তব্য সাধনে হৃদয়ের সমুদয় শক্তি অপণ করিতেন, তাহা হইলে তাহার আজ কত না উন্নতি দেখিতাম । ব্রাহ্মসমাজের জন্য কৰ্ম্ম করিতে ইচ্ছা করিলে প্রথমেই নেতৃত্বপদের উচ্চাকাঙক্ষাকে বিসর্জন দিয়া আসিতে হয়—নহিলে ক্রমে ক্রমে ধৰ্ম্মসাধনের প্রথম উপায় বৈরাগ্য হইতে বহুদূরে পড়িতে হইবে ; এবং বৈরাগ্য না আসিলে প্রকৃত বিবেকের পরিবর্তে মায়াবিবেক আসিয়া এই নেতৃত্বাকাঙক্ষণকে বৰ্দ্ধিত ও পরিপুষ্ট করে। নেতৃত্বাকাঙক্ষ রাজনৈতিক প্রভৃতি সাংসারিক বিষয়ে তত অনিষ্টকর না হইলে ও হইতে পারে, কিন্তু ব্রাহ্মসমাজের, কেবল ব্রাহ্মসমাজের নহে, সকল ধৰ্ম্মসমাজেরই ইহা গুরুতর অনিষ্ট সাধন করে । সত্যের দিকে আtত্মার দৃষ্টিকে মুসংযত করিয়া না রাখিলে নেতৃত্বের দুষ্ট অাশা পাতি সাংসারিক ধূলিরাশি দেই দৃষ্টিকে মলিন করিয়া দিবে এবং পারমার্থিক বিষয়ে অধিকদূর অগ্রসর হইতে দিবে না । ব্রহ্মের প্রতি হৃদয়ের প্রীতিকে উন্নত করিব এবং ব্রহ্মের প্রিয় কার্য্য বলিয়াই ধৰ্ম্ম কার্য্য করিব । কৰ্ম্মফলের প্রতি আমাদিগের উৎকণ্ঠা যেন না থাকে । আমরা ভাল কাজ ভাল বলিয়াই কবির, কিন্তু তাহার জন্য আমাদের সম্পৎ হইবে, কি বিপদ হইবে, সেদিকে যেন আমাদের আদে লক্ষ্য না থাকে— কৰ্ম্ম করিব আমরা, ফল দিবেন ফলদাতা সেই মঙ্গলস্বরূপ পরমেশ্বর ; তিনি আমাদের পিতা, তিনি আমাদের মাতা—তিনি এমন ফল দিবেন, যাহা অনন্তকালের জন্য আমাদের মঙ্গলজনক হইবে ; অতএব মাতৃক্রোড়ে শিশুসন্তানের ন্যায় আমরা যেন সেই প্রেমময়ী জননীর প্রেম মুখ দেখিতে থাকি এবং নির্ভয়ে তাহার প্রিয় কার্য্য শুভকৰ্ম্ম সম্পাদনে রত থাকি । ব্রহ্মপরায়ণ সাধু ব্যক্তিগণ ঈশ্বর খ্ৰীতিকাম হইয়। র্তাহার প্রিয়কাৰ্য্য সকল সাধন করিতে থাকিলেই ব্রাহ্মসমাজের উন্নতি এবং তাহ না করিয়া সাংসারিক ফলকামনায় হৃদয়কে পূর্ণ করিলেই ব্রাহ্মসমাজের অবনতি । হে পরমাত্মন, তুমি যেমন আমাদিগের হৃদয়ের দেবতা,তেমনি তুমি ব্রাহ্মসমাজেরও অধিষ্ঠাত্রী দেবতা ; তুমি , আমাদিগের পাষাণ হৃদয় বজ দ্বারা বিদীর্ণ করিয়া বিশুদ্ধ