পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশ্বিন ১৮১২ ృం\రి = *oso. _ _ বল—তাহাকে ধিক্ ! ব্ৰহ্ম তেজ বলের বল মহাবল !” ভাগীরথী শুধুতো আর নদী ভাগীরথী নহে, শাস্ত্রের বিষ্ণু মতে তিনি দেবী ভাগীরথী ; তেমনি ব্রাহ্মণ শুধু তো আর আর্য্য-শৰ্ম্ম নহে–শাস্ত্রের বিধান মতে তিনি দেব শৰ্ম্ম । গঙ্গাস্নানকে গঙ্গাস্নান না বলিয়া কেহ যদি বলেন নদী-স্নান, তবে তাহা শ্রবণ মাত্রে – এমন যে শীতলসলিলা দেবী, ভাগীরথী, রোষের বাড়বানলে তিনিও উষ্ণমূৰ্ত্তি ধারণ করিয়া ওঠেন বা ! তেমনি ব্রাহ্মণের ব্রহ্মতেজকে ব্ৰহ্মতেজ না বলিয়া কেহ যদি বলেন “আর্য্যতেজ”~~ব্রাহ্মণ-শাস্ত্রকে ব্রাহ্মণশাস্ত্র না বলিয়া বলেন “আর্য্য-শাস্ত্র”—ব্রাহ্মণ জাতিকে ব্রাহ্মণ-জাতি না বলিয়া বলেন “আর্য্য জাতি’’, তনে তাঙ্গাতে ব্রহ্মণ্য দেবের কর্ণে শেল বিদ্ধ হুইবারই 35 || পূৰ্ব্বে দেখা গিয়াছে যে, এক্ষণকার কালে তিন বর্ণকে এক শব্দে বাচন করিবার জন্য অাৰ্য্য শব্দের সাহায্য যাচূঞা করা শিরো নাস্তি শিরঃপীড়া এবং এক্ষণে দেখা গেল যে, ব্রাহ্মণকে আর্য্য উপাধি প্রদান করিলে ব্রহ্মণ্য দেবকে প্রকারণ স্তরে অপমান করা ঠয ;—তবেই হইতেছে যে, বৰ্ত্তমান কলিযুগে ভারত বর্ষের কোনো জাতি-বিশেষকে অথবা কোনো জাতিসমষ্টিকে লক্ষ করিয়া জাতি-বাচক অর্থে আর্য্য-শব্দ ব্যবহার করা নিতান্তই বিড়ম্বনা। অতএব অধু নাতন কালে আৰ্য্য শব্দ উচ্চারণ করিবার পূৰ্ব্বে কিরূপ স্তলে তাহাকে কিরূপ অর্থে প্রয়োগ করা যুক্তি-সঙ্গত তাঙ্গা এক লার ভাবিয়া দেখা কৰ্ত্তব্য । কি স্থ তাহা করিতে গেলে আর্য্য-শব্দের অর্থ কাল-ক্রমে পরিবৰ্ত্তিত হইয়া কোথাকার জল কোথায় আসিয়া দাড়াইয়াছে, তাহার প্রতি একবার প্রণিধান করিয়া দেখা আবশ্যক ; এই বিবেচনায় এইখানে তাহার একটা চুম্বক আলেখ্য প্রদর্শন করা যাইতেছে। আমাদের দেশে আর্য্য-শব্দের প্রয়োগ প্রথমে আর্য্যাবর্তের চতুঃসীমার মধ্যে অবরুদ্ধ ছিল ; তাহার পরে তাহা ভারতবর্ষের দক্ষিণাভিমুখে এবং পূৰ্ব্বাভিমুখে ক্রমশই দূরে দূরে পরিব্যাপ্ত হইয়া কলিকাতার বাজারের সুলভ গোকুগ্ধের ন্যায় সৰ্ব্ব-ঘটেই অধিকার fবস্তার করিতে আরম্ভ করিল। মহানগরীর অভি ধানে যেমন পোনেরো আনা জল-মিশ্রিত এক আনা দুগ্ধও দুগ্ধ শব্দের বাচ্য—কলিযুগের অভিধানে তেমনি ভদ্রা ভদ্র যে-সে-বংশীয় ভদ্রলোক আর্য্য নামের অভিধেয় । এই খেদে আর্য্য-শব্দ মামাদের দেশে এতকাল পর্য্যন্ত অমর-কোষের কোটরাভ্যস্তরে মুখ মুড়িমুড়ি দিয়া কথঞ্চিৎ প্রকারে কালাতিপাত করি আর্য্যামি এবং সাহেবিআন৷ ബങ്ക তেছিল—লোকালয়ে তাহাকে বড় একটা বাহির হইতে দেখা যাইত না ;– বিশেষতঃ মুসলমানদিগের প্রাতুর্ভাব কালে আর্য্য-নারী দিগের দেখাদেখি আর্যশব্দে রও বাঙ্গন্ধ,প্তি একেবারেই দেশ ছাড়িয়া পলায়ন করিয়াছিল । কিন্তু আজ অকস্মাৎ একি বজ্ৰাঘাত ! বিদ্বজ্জন-পুরের পথে ঘাটে মাঠে হাটে আর্য্যশব্দের একি প্রবল বন্যা ! আমাদের দেশে অধ্য শব্দের রাতারাত এই যে নুতন অভু্যদয়, ইহার মুল প্রবওঁ নমুও নহেন, যাজ্ঞবল্ক্যও নহেন, পরাশর ও নহেন, বেদ ব্যাসও নহেন—তবে কে ? অার কে —উক্ষ তরণ (অর্থাৎ Oxford) চতুষ্পাঠীর অধ্যাপক মহামহোপাধ্যায় শ্রমন ম্যাক্স মুলার ভট্ট । হতিপূঝে আর্য্য-জাতিকে একটা মৎস্যরূপে কল্পনা করা গিয়াছে, এক্ষণ অায্য-শব্দের প্রয়োগপদ্ধতিকে সেইরূপে কল্পনা করা হো’ক । পুরাণের এক স্থানে এইরূপ একটা উপন্যাস আছে যে, একট। মৎস্য প্রথমে এক হাড় জলে প্রতিপালিত হহঁয়াছিল ; কাল ক্রমে যখন সে বড় হইয়া হাড়ির সাম। ছাড়াইয়। উঠিল তখন তাহাকে একটা ডোবার মধ্যে ছাড়য়া দেওয়া হইল ; যখন সে আরো বড় হহয়৷ ডোবার সীমা ছাড়াইয়া উঠিল তখন তাহাকে পুষ্করিণীতে ছাড়িয়া দেওয়া হইল ; এরূপ করিয়া মৎস্যটা ক্রমশই যত বাড়িয়া উঠিতে লাগিল ততই সে বৃহৎ হইতে বৃহত্তর জলাশয়ে নিক্ষিপ্ত হইয়া অবশেষে যখন সমুদ্র হইতে মহা-সমুদ্রে প্রবিষ্ট হইল তখন ক্রমে সেখানেও তাহার স্তান-সংকুলন হওয়া ভার হইয়। উঠিল ; কিন্তু আমাদের দেশে আর্য্য শব্দের প্রয়োগ-পদ্ধতি এতকাল পর্য্যস্ত ঠিক তাহার বিপরীত পথ অনুসরণ করিরা আদিতেছিল ; ক্রমশই তাহা ক্ষুদ্রহইতে ক্ষুদ্রতর জলাশয়ে সংক্রামিত হইয়া—এককালে যাহা শত-যোজন ব্যাপী তিমি মৎস্য ছিল কালক্রমে তাহা কীট হইতে কীটাণুতে পরিণত হইতে লাগিল ; ইউরোপ এসিয়া এবং আফ্রিকার ত্রিবেণী-সঙ্গম হইতে আর্য্যাবর্তের পুষ্করিণীতে এবং তথা হইতে অমর-কোষের ডোবার ভিতরে নিক্ষিপ্ত হইয়া নিরীহ মৎস্যটি মর্ত্যলোক হইতে অবসর গ্রহণ করিবার পস্থ। অন্বেষণ করিতেছিল—তাহার যখন নাভিশ্বাস উপস্থিত তখন মহাত্মা ম্যাক্সমুলার ভট্ট দয়ার্দ্র চিত্তে তাহাকে সেই সংকীর্ণ কারাগার হইতে আলোকে বাহির করিয়া অনিয়া—আবার তাহাকে তাহার পুরাতন বাসস্থানে —সুর্য্যের উদয়াস্তম্পর্শী মহা-সমুদ্রে-প্র ভ্যানয়ন করি - লেন। অতএব ম্যাক্সমুলারের আর্ষ স্বতন্ত্র এবং অমর-কোষের আর্য্য স্বতন্ত্র ।