পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S२९ ধারাবাহী জ্ঞান নামে অভিহিত হয় । এই ধারাবাহী জ্ঞানের প্রথমাংশ (প্রথমক্ষণেtৎ পন্ন জ্ঞান) ব্যতীত অপরাংশ সমস্তই অধিগত বিষয়ক হওয়ায় প্রথমোক্ত প্রমালক্ষণ অর্থাৎ অনধিগত-শব্দ-ঘটিত প্রমালক্ষণট অব্যাপ্তি দোযাত্ৰাত গ্রু হইতে পারে। সত্য বটে ; কিন্তু রূপবিহীন কালের ইন্দ্রিয়গোচরতা স্বীকার করিলে প্রোক্ত অব্যাপ্তি দোষের আশঙ্কা থাকে না। কেন ? তাহ প্রণিধান কর—ঘট-জ্ঞানের সঙ্গে কালেরও জ্ঞান হয় । কালের জ্ঞান “এখন ঘট আছে” ইত্যাদি আকারে উল্লিখিত হইয়া থাকে । এক ধারাবাহী-জ্ঞানের স্থিতিকাল মধ্যে যতগুলি ক্ষণ (সূক্ষাংশ) থাকুক না কেন, সমুদায় গুলিই জ্ঞানের গোচর হয় সত্য ; পরন্তু সে সকল জ্ঞান ও সে সকল ক্ষণ বিভিন্ন । একই ক্ষণ ক্ষণান্তরীয় জ্ঞানের অবগাছা নহে । যে ক্ষণ অতীত হয় সে ক্ষণ ফিরিয়া আইসে না । ক্ষণ সকল উৎপন্নস্বভাব ; উৎপন্ন হইয়া মরিয়া যায়, তজ্জন্য দ্বিতীয়াদি ক্ষণ নূতন । সেই কারণে প্রত্যেক ক্ষণই অনধিগত অর্থাৎ অননুভূত থাকে। ক্ষণগুলি অনধিগত থাকায় তদ্বিশিষ্ট ঘটও অনধিগত বলিয়া গণ্য হয় । সুতরাং অনধিগত শবদ { লক্ষ্যে লক্ষণ না গেলে অব্যাপ্তি দোষ হয় । অর্থাৎ তা চ “ল লক্ষ্য স্তির হয় না । ধারাবাহী জ্ঞানের প্রথমাংশ ব্যতীত অপরাংশে অনধিগত শব্দ ঘটিত লক্ষণ যায় না । না যাওয়ায় তাহ অব্যাপ্ত । কোন এক দtশনিক পণ্ডিতের মত এই যে, দ্রব্য প্রত্যক্ষের সঙ্গে সঙ্গে ‘এখন’ ‘তখন’ ‘ছিল’ ‘আছে’ ইত্যাদি উল্লেখে কালের (ভূত, ভবিষ্যৎ ও বর্তমাম রূপ কালের) জ্ঞান হয়। সে জ্ঞানও প্রত্যক্ষজ্ঞান। অর্থাৎ তাহাও চক্ষু রাদি ইন্দ্রিয়ের দ্বারা সমস্থত । চক্ষু ঘট দেখে ; সঙ্গে সঙ্গে তদবচ্ছিন্ন কালকেও দেখে । কালের জ্ঞান হয়, বর্তমানতাদির জ্ঞান হয়, তাহ অনুমানজ অথবা অন্য কোন প্রমাণজন্য বলিবার উপায় নাই । কাজেই মানিতে হয়, স্বীকার করিতে হয়, কাল রূপবিহীন হইলেও রূপাদিমং দ্রব্যাস্তরের ন্যায় চক্ষুরাদি ইন্দ্রিয়ের দ্বার। বিষয়ীকৃত বা গৃহীত হয়। তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা · ১২ কল্প, ৪ তাগ ঘটিত প্রমালক্ষণ ধারাবাহী জ্ঞানে অব্যাপ্ত হয় না ; প্রত্যুত ব্যাপ্তই হয়। ঘট এক বটে; কিন্তু প্রথম-ক্ষণ-বিশিষ্ট ঘট ও দ্বিতীয়ক্ষণবিশিষ্ট ঘট বিভিন্ন। যেমন একই ঘট শ্বেতবিশেষণে এক ও পীত বিশেষণে অন্য ; তেমনি বিশেষণের ভেদে বিশেষ্যের ভেদ অবশ্য স্বীকার্য্য । শ্বেতত্ব বিলোপের পর ঘটে পীতত্ব আশ্রয় করিলে তখন কি আর তাহ শ্বেত ঘট বলিয়। প্রতীত হয় ? তাহা হয় না । মুতএব, বর্ণিত প্রকারে প্রথমোক্ত প্রমা-লক্ষণ ধারাবাহী জ্ঞানে ও সমন্বিত হয় ; এবং অব্যাপ্তি দোষের আশঙ্কা ও নিবারিত হয় । যদি এ সমাধান পরিতোযকর না হয় তবে সমাধানান্তৱ শুন । বস্তুতঃ বেদান্ত সিদ্ধান্তে ঐ জ্ঞান নানা জ্ঞানের প্রবাহ নহে। উহা একই জ্ঞান । ঘট যাবৎ পর্য্যন্ত স্ফরিত হইবে, জ্ঞানে ভাসমান থাকিবে, তাবৎ পৰ্য্যন্ত তাহ। একটা জ্ঞান। হেতু এই যে, অন্তঃকরণের তাবৎ কালস্থায়ী ঘটাকারা বৃদ্ভি• একটী । (বৃত্তি = অবস্থা। অর্থাৎ অন্তঃকরণের সেই সেই আকারে পরিণাম) যাবৎ না বিরোধি বৃত্তি জন্মে তাবৎ তাহা এক বলিয়া গণ্য । (যাবৎ না পটজ্ঞান অথবা অন্য কোন জ্ঞান জন্মে তাবৎ ঘটজ্ঞান জীবিত থাকে)। যেহেতু বৃত্তি এক, সেই হেতু তৎপ্রতিফলিত চৈতন্যও এক । জ্ঞান কি ? বৃত্তিপ্রতিফলিত চৈতন্যই জ্ঞান । সুতরাং বেদান্তসিদ্ধান্তে ধারাবাহী জ্ঞানেও কথিত প্রকারের প্রমালক্ষণ যাইতেছে বা থাকি Cマび豆 I বলিতে পার, বেদান্তসিদ্ধান্তে বিশ্বংসার মিথ্যা, ঘট পট সমস্তই মিথ্যা, মিথ্যাপদার্থেরই নামান্তর বাধিত, তবে কিরূপে বাধিত ঘট পটাদি বিষয়ক জ্ঞান