পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাৰ্ত্তিক ১৮১২ প্রমাণতত্ত্ব ১২৩ -=ജ-ആ-- -- প্রমা , বলিয়া গণ্য বা স্বীকার্য্য হইতে পারে ? ইহার প্রত্যুত্তর এই যে, যাবৎ ংসার ভ্রান্তি জীবিত থাকে তাবৎ ঘটাদি বস্তু অবাধিত অর্থাৎ মিথ্যা নহে। অবাধিত শব্দের অডুিপ্রেতার্থ এই যে, সংসার দশায় যে যে দৃশ্যের বাধ দৃষ্ট হয়—সেই সেই দৃশ্যই বাধিত । শ্রুতি এ কথা বলিয়াছেন । যথা—“আত্মা যখন দ্বৈতের ন্যায় হন অর্থাৎ যখন সংসারী হন, তখন ভিন্ন হইয়া ভিন্ন দর্শন করেন ।” শ্রীতির অভিপ্রায় এই যে, পরমার্থ পক্ষে অদ্ধৈ তই তত্ত্ব; দ্বৈত মিথ্যা, অর্থাৎ ভ্রান্তি কল্পিত । অতএব, ঐ অবাধিত শব্দের বিবক্ষিতাৰ্থ সং– সার তদনুসারে লৌকিক ঘটপটাদি জ্ঞান অ প্রমা নহে, প্রত্যুত প্রম । যাবহ সংসার— তাবহ ঘট পটাদি জ্ঞানে প্রমালক্ষণ অব্যাপ্ত নহে । এ কথা বেদান্তবাদী অাচার্য্যেরা বলিয়াছেন। যথা—“যাবৎ না আত্মতত্ত্ব সাক্ষাৎকার হয়—তাবৎ পর্য্যন্ত দেহাত্মজ্ঞান যদ্রপ প্রমা, এই লৌকিক ঘট পটাদি জ্ঞান ও তাবৎ পর্য্যন্ত তদ্রুপ প্রমা। অর্থাৎ প্রমাণপরিনিষ্ঠিত সত্য অভ্রান্ত বলিয়া গণ্য করিতে হইবেক ।” প্রমাণ ঘড়িধ অর্থাৎ ছয় প্রকার । প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান, আগম, অর্থাপত্তি ও অনুপলব্ধি । এই ঘড়িধ প্রমাণের মধ্যে প্রত্যক্ষ প্রমাণ জ্যেষ্ঠ ও অন্যান্য প্রমাণের উপজীব্য ; সেই কারণে প্রথমে প্রত্যক্ষ প্রমাণই বিবেচিত হয় । প্রত্যক্ষ প্রমাণ কি ? তাহা কিংস্বরূপ ? এই প্রশ্নের প্রত্যুত্তরে বলা যায়, যাহা প্রত্যক্ষ প্রমার করণ তাহাই প্রত্যক্ষ প্রমাণ । প্রত্যক্ষ প্রমা কি ? প্রত্যক্ষ প্রমা চৈতন্য । যাহার অন্য নাম চৈতন্য— সেই নিত্যাপরোক্ষ মুখ্য জ্ঞান এই বেদান্ত দশায় অবাধিত অর্থাৎ অমিথ্যা । । I в Дра в - - --- --α- _ শাস্ত্রে প্রত্যক্ষ প্রমা নামে কথিত হয় । এ ৱিষয়ে শ্রতিবাক্য যথা—“যাহা সাক্ষাৎ অপরোক্ষ—তাহ ব্ৰহ্ম ।” সাক্ষাৎ শব্দের অর্থ অব্যবধান অথবা অনধীন । অপরোক্ষ শব্দের অর্থ প্রত্যক্ষ । ব্রহ্ম শব্দের অর্থ বৃহৎ—নিরতিশয় বৃহৎ । বেদান্ত মতে এক মাত্র চৈতন্য পদার্থই নিরতিশয় বৃহৎ । অর্থাৎ পূর্ণ বা সৰ্ব্বব্যাপী । মিলিতাৰ্থ এই যে, চৈতন্যই স্বতঃসিদ্ধ প্রত্যক্ষ অর্থাৎ নিত্যাপরোক্ষ । ইহা স্বাধীন প্রকাশ, সেই জন্য সাক্ষাৎ নামের নামী । ঘট পটাদির প্রকাশ চক্ষুরাদির অধীন, মনোবৃত্তির দ্বারা ব্যবহিত, অর্থাৎ অগ্রে ঘটাকার মনোবৃত্তি হয়, তৎপরে ঘট প্রকাশ প্রাপ্ত হয়, কিন্তু চৈতন্য সেরূপ নহে । চৈতন্য স্বয়ম্প্রকাশ । এই স্বয়ম্প্রকাশস্ব ভাব চৈতন্য পদার্থই বেদান্তশাস্ত্রের মুখ্য প্রত্যক্ষপ্রমা । যাহা যাহা তাহার করণ (উৎপাদক) তাহা তাহা এই শাস্ত্রে প্রত্যক্ষপ্ৰমাণ । চক্ষুরাদি ইন্দ্রিয়গণ তাহার করণ, সুতরাং চক্ষুরাদি ইন্দ্রিয়গণই প্রত্যক্ষ প্রমাণ বলিয়া গণ্য । প্রশ্ন —বেদান্তমতে চৈতন্য অনাদি, নিত্য, তাহার উৎপত্তি নাই। তবে কি রূপে চক্ষুরাদি তাহার করণ (উৎপাদক) হয় ? হইয়া প্রত্যক্ষপ্রমাণ নামে কথিত হয় ? இ প্রত্যুত্তর –চৈতন্য অনাদি সত্য ; কিন্তু অন্তঃকরণের বৃত্তিনিচয় তাহার অভিব্যঞ্জক। অন্তঃকরণবৃত্তি ব্যতীত অন্যত্র তাহার অভিব্যক্তি বা প্রতিফলন নাই বা হয় না । সুতরাং অন্যত্র তাহা থাকা না থাক তুল্য অর্থাৎ তাহার প্রকাশ অবরুদ্ধপ্রায় থাকে। অতএব, যাহার ব্যাপারে চৈতন্যের অভিব্যক্তি, তাহাই তাহার করণ। চৈতন্যের উৎপত্তি না থাকিলেও