পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিখিত ছিল, “পঞ্চাশ বৎসর হইল আমি কর্ডোভার কালিস্ক হইয়াছি। যতপ্রকার ধন, মান, সুখ, মিত্র, ঐশ্বৰ্য্য হইতে হয় সকলি করুণাময় পরমেশ্বর আমার মস্তকে ঢালিয়া দিয়াছেন । কিন্তু আমি ভাবিয়া চিন্তিয়া দেখিয়াছি এবং বেশ বলিতে পারি যে, এই পঞ্চাশ বৎসরের মধ্যে প্রকৃত পক্ষে মোট চোঁদ দিন মুখে কাটা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ইয়াছি।” নিশ্বাস লওয়াই জীবন নহে । ইন্দ্রিয়-সুখই সুখ নহে। ধৰ্ম্ম-জীবনই প্রকৃত জীবন । ৩। একদা মেসিড়ণের রাজা ফিলিপ্‌ অলিম্পিক মেলার সময় এক জন প্রতি দ্বন্দীর সহিত দ্বন্দযুদ্ধ করিতে করিতে ভূতলে বালুক-রাশির উপর পড়িয়া গিয়াছিলেন । উত্থান করত বালুকার উপর । নিজ শরীরের আয়তন দেখিয়া বলিয়াছিলেন “হায়! আমাদের মৃত্যু হইলে । এই দেহ কতটুকু স্থানের মধ্যে লুকাইবে । । কিন্তু জীবদ্দশায় আমরা সমগ্র পৃথিবী । লাভ করিবার জন্য ব্যস্ত রহিয়াছি।” ইহা কেবল পথ না দেখিয়া চলারই ফল । ৪। স্বগ কোথায় ? প্লেটো বলিবেন, “তুষারাবৃত অলিম্পাস্শিখরে।” স্বইডেনবর্গ বলিবেন “উহা সৰ্ব্ব স্থানেই।” কবি ওয়ার্ডসূওয়ার্থ বলিবেন “শৈশবে উহ আমাদের নিকটেই থাকে ।” অন্য কেহ হয় ত বলিবেন “কাশিতে বা হিমালয়ে ।” এইরূপ র্যাহার যাহা ধারণা তাহাই বলিবেন । কিন্তু তিন বৎসর বয়স্ক আমার ভ্রাতৃপুত্র “রঞ্জিৎকে জিজ্ঞাসা কর, “স্বর্গ কোথায় ? সে বলিবে, “সেই যে, যেখানে পরমেশ্বর থাকেন !” বস্তুতঃ শিশুর উত্তর জ্ঞানী, মহাজনদের উত্তর অপেক্ষাও খাটি। যে আত্মাতে, যে কার্ষ্যে রঞ্জিতের “পরমেশ্বর” আছেন, । s२ कन्न s gानं, سـالـ so. সেই খানেই স্বর্গ ; আর যেখানে তিনি নাই সেই খানেই নরক । ৫ । এক দিবস জগদ্বিখ্যাত কলাবৎ হেড্রন এক দল “বড়লোকের” সহিত । ছিলেন, এমৎ সময়ে ক্লান্ত হইয়া পড়িলে কি প্রকারে অবসাদ দূর করিয়া পুনরায় পাঠাদি দুরূহ বিষয় কার্য্যে মনোনিবেশ করা যায় তাহাই আলোচনা হইতে লাগিল। এক ব্যক্তি বলিলেন “অবসন্ন হইলে আমি এক গেলাস্ মদ খাই।” দ্বিতীয় জন বলিলেন “আমি বন্ধু বান্ধবের সহবাসে স্ফক্তি লাভ করি।” হেড্রন পৃষ্ট হইয়৷ উত্তর করিলেন “অবসন্ন হইয়া পড়িলে আমি প্রকোষ্ঠের দ্বার রুদ্ধ করিয়া প্রার্থনা করি । তাহাতেই আমি এত সুখ, বল ও আরাম পুাই যে আর কিছুতেই তেমন পাই না।” অথচ চেড়ন যে এক জন বড় ভক্ত ছিলেন তাহা নহে । ৬ । রোমৃসম্রাট অগাষ্টাস শুনিয়া ছিলেন যে ঋণে এক ব্যক্তির মস্তকের কেশ পর্য্যন্তও বিকাইয়া যাইবে, তথাপি সে অক্লেশে নাসারন্ধে তৈল প্রদান পূর্বক নাসিকাভেরী ধ্বনিত করিতে করিতে নিদ্রার জয় ঘোষণা করিয়া থাকে। এতৎ বৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া তিনি ঐ ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির বিস্মৃতিজনক শয্যাট ক্রয় করিবার অভিলাষ প্রকাশ করিলেন, কারণ মস্তকে ঋণের বোঝা থাকা সত্ত্বেও মানুষ যে শয্যায় অকাতরে নিদ্রা যাইতে পারে, তাহ। নিশ্চয়ই অত্যাশ্চর্য শয্যা হইবে। আমরাও যে পরমেশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা-ঋণের বিষয় মুখে সৰ্ব্বদা বলিয়াও যথাপূৰ্ব্ব দিব্য নিদ্রায় অভিভূত থাকি, ইহ আরও বিচিত্র । মহারাণীর শ্রবণগোচর হইলে তিনি আমাদের শয্যা ক্রয়ের অভিলাষ প্রকাশ করিতে পারেন !