পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృ8షి তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা . ১২ কল্প, ৪ ভাগ -- ভাবে দিনপাত করিয়া কেবল হরিকথা প্রসঙ্গে কালযাপন করিয়াছেন । চৈতন্যানুচরদিগের কঠোর বৈরাগ্য ও অহেতুকী হরিভক্তির বিষয় চিন্তা করিলে আমাদের সংসারাসক্ত নীরস চিত্ত ক্ষণকালের জন্য স্তম্ভিত হইয়া উঠে । আমাদের দেশে অনেকেই রূপ সনাতনের নাম শুনিয়াছেন । “চৈতন্য কবিতামুত” প্রভৃতি বৈষ্ণব গ্রন্থে রূপ সনাতনের বিষয় অবগত হওয়া যায়। খৃষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে বঙ্গ বিহার ও উড়িষ্যার তাৎকালিক রাজধানী গৌড় নগরে সৈয়দহুসেন স৷ নামক একজন মুসলমান রাজপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন । রূপ ও সনাতন উক্ত রাজার উজির অর্থাৎ প্রধান মন্ত্রীর পদে নিযুক্ত ছিলেন। সে সময়ে হিন্দুধৰ্ম্মের প্রবল প্রতাপ । প্রচুর অর্থলোভেও ব্রাহ্মণসন্তানেরা তখন মেচ্ছ সংস্পশে আসিতেন না | র্যাহার। রাজকাৰ্য্যে যবন সহবাসে থাকিতেন, হিন্দু সমাজে তাহারা নিন্দনীয় হইতেন । যখন এদেশে অধিকার বিস্তার করিয়া জাতিনির্বিশেসে উপযুক্ততানুসারে দেশীয় লোকদিগকে রাজকার্য্যে নিয়োগ করিতে লাগিলেন, তখন ব্রাহ্মণেতর কায়স্থ ইত্যাদি জাতিই রাজানুগ্রহ লাভ করিয়া দেশ মধ্যে সন্ত্রমশালী হইয়া উঠিযুছিলেন। এখনকার ন্যায় সে সময়ে ব্রাহ্মণজাতি আশ্রমাচারপরিভ্রষ্ট হইতে বিশেষরূপে অভ্যস্ত হয়েন নাই । প্রমাণস্থলে আমরা রূপ সনাতনের নাম উপন্যস্ত করিতে পারি। রূপ সনাতন কোন জাতীয় ছিলেন, ইহা লইয়া অনেকে বিবাদ করেন । কেহ বলেন, তাহারা মুসলমান ছিলেন এবং কেহ কেহ এরূপ বলেন যে, তাহারা যদিও ব্রাহ্মণ ছিলেন,কিন্তু পাৎসার মুসলমান রাজার । দাসত্ব করাতে সমাজচ্যুত হইয়াছিলেন, এবং কিয়ং পরিমাণে মুসলমান ভাবাপন্ন হইয়া পড়িয়াছিলেন । এই সিদ্ধান্তই আ- , মাদের নিকট সমীচীন বলিয়া বোধ হয়। রূপের দবিরখtশ ও সনাতনের সাকর মল্লিক এই দুই যাবনিক নাম ছিল। “চৈতন্য চরিতামৃত” পাঠে অবগত হওয়া যায় রূপ সনাতন নানাস্থানে আপনাদিগকে স্লেচ্ছসংস্পশা অস্পৃশ্য হীনজাতি বলিয়া পরিচয় দিয়াছেন। যাহা হউক, তাহারা যে বিপ্রকুলো স্তব উচ্চবংশজাত ছিলেন, তৎসম্বন্ধে জীব গোস্বামী প্রণীত “বৈষ্ণব তোষিণী” গ্রন্থই প্রমাণ । জীব গোস্বামী রূপ সনাতনের ভ্রাতুস্প ত্র। উক্ত গ্রন্থে বর্ণিত আছে, ব্রাহ্মণকুলোৎপন্ন কর্ণাটরাজ সর্বজ্ঞের శ్లోরাজ্যচ্যুত হইলে তদীয় পুত্র বঙ্গদেশে আসিয়া বাস করেন। রূপ সনাতন তাহারই বংশ সম্ভত । রূপ সনাতন কেবল সংকুলজাত ব্রাহ্মণ সন্তান ছিলেন না, বিদ্যাবুদ্ধি ও ভগবৎভক্তিতেও পরম প্রবীণ ছিলেন । রাজকার্য্যের অবকাশ কালে ভাগবতাদি ভক্তিশাস্ত্র অধ্যয়ন ও হরি কথাপ্রসঙ্গে পবিত্রচেত৷ সাধু সজ্জনদিগের সঙ্গ লাভ করিতেন। এই অবস্থায় ইহার “হংসদূত” ও “পদাবলী’’ নামক গ্রন্থ রচনা করেন এইরূপ প্রবাদ - যখন গৌরাঙ্গদেব নীলাচল হইতে বৃন্দাবন যাত্রা করত কলনাদিনী ভাগীরথীর উভয়তীরবর্তী জনপদবাসীগণকে হরিভক্তির প্রবল উচ্ছাসে আপ্নত করিয়া গোড়নগর রামকেলী গ্রামে আসিয়া উপনীত হইলেন এবং নাম সংকীর্তনের মধুর নিনাদে নগরবাসীগণকে চমকিত করিয়া তুলিলেন ; তখন শ্ৰী চৈতন্যের মুখারবিন্দনিঃস্থত হরিনামস্থধা পান করিবার জন্য এবং তাহার পবিত্র সহবাসস্থখ সম্ভোগ করিবার জন্য