পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృ88 ജ হেন যবনেও মানিলেক গৌরচন্দ্র ।” চৈতন্য ভাগবত অস্তখণ্ড । এই অবস্থায় রামকেলি গ্রামে শ্রীচৈতন্যের সহিত রূপ সনাতনের মিলন হয় । রূপ সনাতনের ভক্তি নিষ্ঠা বিনয় দৈন্য দেখিয়া চৈতন্য পরম প্রীত হইয়া বলিলেন, তোমরা যখন বিদ্যাবিনয়সম্পন্ন সৰ্ব্বাংশে শ্রেষ্ঠ হইয়াও আপনাদের হীনতা অনুভব করিতেছ, এখন শ্ৰীহরি তোমাদিগকে সত্বরেই উদ্ধার করিবেন । তোমর বিষয় ত্যাগ করিয়া নিশ্চিন্তমানস হও । আমি পশ্চাৎ তোমাদের সঙ্গে মিলিত হইয়া সবিশেষ বলিব । এই বলিয়া গৌরাঙ্গ যাবনিক নামের পরিবর্তে র্তাহাদিগকে রূপ সনাতন এই দুই নাম দিয়া বিদায় করিলেন । “আমার ঠাই আইল । রাপ সনাতন নাম ॥ দুই ভাই ভক্তরাজ কৃষ্ণকৃপাপাত্র। ব্যবহারে রাজমন্ত্রী হয় রাজপাত্র ॥ বিদ্যাভক্তি বুদ্ধি বলে পরম প্রবীণ । তবু আপনাকে মানে তৃণ হৈতে হীন ॥ তার দৈন্য দেখি শুনি পাষাণ বিদরে । আমি তুষ্ট হয়। তবে কহিল তাহারে । উত্তম হয়" হীন করি মান আপনারে । অচিরে করিবে কৃষ্ণ তোমার উদ্ধারে ॥” চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য খণ্ড । “আইলেন যবে শুনি রূপ সনাতন । রাত্রি যোগে গিয়া লইল চরণে স্মরণ ॥ বহু স্তুতি নতি করি চরণে পড়িয়া । আৰ্ত্তনাদ করে অতি বিষাদিত হইয়া ॥ প্রভু বড় কৃপা কৈল দয়ার্দ্র হইয়া । সংক্ষেপে কহিল কিছু উপদেশ দিয়া ॥ বিষয় ত্যজিয়া হও নিশ্চিন্ত মানস । পশ্চাৎ মিলিব আমি কহিব বিশেষ । . . _. রূপ সনাতন নাম ছহঁাকরে দিয়া । । পুনঃ ফিরি পুরুষোত্তম গেলেন চলিয়া ॥” ভক্তমাল গ্রন্থ l. রূপ সনাতন গে৷রচন্দ্রের দর্শন লাভ করিয়া কৃতকৃতাৰ্থ হইয়া গৃহে ফিরিলেন । পৃথিবীর ধন জন সন্ত্রম সম্পত্তি মুখ সোঁভাগ্য সমস্তই অসার, বিষয়লিপস। পরিত্যাগ করিয়া নিশ্চিন্ত মানস হইয়া হরিচরণাশ্রয় করাই কেবল মানব জীবনের সার্থকতা ও শান্তিলাভের হেতু এই ভাব র্তাহাদের হৃদয়ে দৃঢ়রূপে মুদ্রিত হইল । বৈরাগ্যের তীব্র অনল হৃদয়ে প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল । রূপ সনাতন দরিদ্র ছিলেন না । পাৎসাহের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন । মান সন্ত্রম অর্থ বিত্তে র্তাহারা পাৎসাহের নিক্ষেই পরিগণিত হইতেন । কিন্তু “ন বিত্তেন তপণীয়ে মনুষ্যঃ” অর্থ বিত্তেতে মানবাত্মার তৃপ্তি নাই । মনুষ্য শতবর্ষ জীবী পুত্র পৌত্র লাভ করুক, হস্তী হিরণ্য অশ্বাদির অধিপতি হউক অথবা মহদায়তন ভূমির অধিকারী হউক, তাহার অন্তরাত্ম। কিছুতেই যথার্থ তৃপ্তি ও আরাম লাভ কfরতে পারে না । “যো বৈ ভূমা তৎ সুখং নাল্পে সুখমস্তি’ ক্ষুদ্র বিষয় রাজ্যে সুখ নাই, ভূমা পরমেশ্বরেতেই মানবাত্মার পূর্ণ পরিতৃপ্তি। মানবের অন্তরে যে মুহুর্তে অনন্ত ভূমা পরমেশ্বরের মঙ্গল ভাব প্রস্ফটিত হয়, সেই মুহূর্তেই ক্ষুদ্র বিষয়ের প্রতি তাহার অনুরাগ হ্রাস হইয়া যায়। যথার্থ বৈরাগ্যের লক্ষণ এই যে, প্রাণ মন যতই ঈশ্বরের প্রতি অনুরক্ত হইবে তদিতর পদার্থের প্রতি ততই বিরাগ উপস্থিত হইবে । যতক্ষণ পৰ্য্যন্ত বিষয় কামনা ও | বিষয়ে প্রবৃত্ত ইন্দ্রিয়গণের উত্তেজনা থাকে ততক্ষণ পর্য্যন্ত চিত্তের বিক্ষিপ্তি অপরিহার্য্য । বিক্ষিপ্ত চিত্তে পরমাত্মার শ্রবণ