পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

פאפאצי কোনওরূপে উপযোগি হইতে পারে না। কেন হইতে পারে না তদ্বিষয়ে পূর্বাচার্ষ্যগণের যুক্তি এইরূপ । তাহারা বলেন কৰ্ম্ম জড় বা অপ্রকাশ-স্বভাব । সুতরাং অজ্ঞানের সহিত তাহার কোন বিরোধিতা নাই। অজ্ঞানও অপ্রকাশ কৰ্ম্মও অপ্রকাশ । সুতরাং কৰ্ম্ম অজ্ঞান নাশে অসমর্থ। আরও বলেন, অজ্ঞান হেতু দেহেন্দ্রিয়াদিতে"অয়মাত্মা’এই আত্মা এইরূপ একটা ধারণা আছে । কিন্তু আত্মা এই দেহেন্দ্রিয়াদির অতীত বস্তু । দেহেন্দ্রিয়াদির ধৰ্ম্ম তাহাতে কিছু মাত্র নাই। আত্মা শুদ্ধ চিন্মাত্র । দেহেন্দ্রিয়াদি হইতে স্বতন্ত্র করিয়া দেখাই আত্মার সম্বন্ধে সম্যক দর্শন। আমি কর্তা, এই ক্রিয়াসাধ্য ফল আমার হইবে ইত্যাদি ধারণা অর্থাৎ কর্তৃত্বাদি জ্ঞান মনেরই হইয়া থাকে। মন সৰ্ব্বেন্দ্রিয়সাধারণ বা স্বতন্ত্র ইন্দ্রিয় । যতক্ষণ আত্মাতে মনের ব্যবহার আরোপিত হয় তাবৎ তিনি কর্তা ভোক্তারূপে ভাসমান হন । আত্মার সম্বন্ধে সম্যক দর্শন হইলে অর্থাৎ মনাদি হইতে র্তাহাকে ব্যতিরিক্ত করিয়া দেখিলে আর র্তাহাতে কর্তৃত্বাদি থাকে না । এখন বুঝিয়া দেখ, কৰ্ম্ম কর্তৃসাধ্য, কৰ্ম্মজন্য ফলও ভোক্তভোগ্য, কিন্তু সম্যক দর্শনে—সম্যক জ্ঞানে আত্মাতে যখন কর্তৃত্ব ভোক্তত্ব কিছুই থাকে না তখন ফলপ্রদ নয় বলিয়াই আত্মজ্ঞানে কৰ্ম্মের কিছুমাত্র উপষোগিতা নাই । জৈমিনীর কৰ্ম্মবাদ অধ্যাত্মরাজ্যে যে ঘোরতর অন্ধকার আনয়ন করিয়াছিল ভগবান শঙ্কর দীপ্ত সূর্ষ্যের ন্যায় উদিত হইয়। তাহা দূর করিয়াছেন। কিন্তু লোকের স্বভাব কেবল প্রাণের তৃপ্তি চায়। কৰ্ম্মকাণ্ডের পুষ্পিত ফলশ্রুতি সেই ভাবকে আরও সন্ধুক্ষিত করিয়া তুলিয়াছে। স্বৰ্গকামনা পুত্ৰৈষণ। বিভৈষণ লোকের কৰ্ম্মপ্রবৃত্তি তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা 》象夺碉,8 @州外 উদিত্ত করিয়াছে। কিন্তু বেদ কৰ্ম্মের বিরুদ্ধে বজ্রনির্ঘোষে এই বলিতেছেন, “পরীক্ষা লোকান কৰ্ম্মচিন্তান ব্রাহ্মণো নিৰ্ব্বেদমায়াৎ নাস্ত্যকৃতঃ কৃতেন’ 19 ব্রাহ্মণ কৰ্ম্মার্জিত লোক সকলকে পরীক্ষা করিয়া অর্থাৎ তৎসমুদায় যে অনিত্য ক্ষয়শীল ইহা বুঝিয়া কৰ্ম্মত্যাগী হইবেন । কৃত যাগযজ্ঞাদি দ্বারা অকৃত অর্থাৎ মোক্ষলাভ হয় না । ধৰ্ম্মস্থাপক মহর্ষি মনু ও কহিয়াছেন, ‘রক্ষন্তি সৰ্ব্ব৷ বৈদিক্যোজুহোতি যজতি ক্রিয়াঃ । সমস্ত বৈদিক ক্রিয়া কি হোম কি যাগ স্বরূপত কি ফলত সমস্তই নষ্ট হইয়া যায়। অতএব “যথোক্রান্যপি কৰ্ম্মাণি পরিহায় দ্বিজোত্তমঃ । আত্মজ্ঞানে শমে চ স্যাৎ বেদাভ্যাসে চ যত্নবান ।” যথোক্ত কৰ্ম্ম সকল পরিত্যাগ করিয়া আত্মজ্ঞান শমদমাদি সাধন ও বেদাভ্যাসে যত্নবান হইবেন । মনুর সিদ্ধান্তে জ্ঞানও কৰ্ম্মের সমন্বয়বাদ আসিয়া পড়িল। তিনি জ্ঞানের সহিত শমদমাদি কৰ্ম্মের সমন্বয় করিলেন । কিন্তু এরূপ সমন্বয় দোষাবহ নহে । যে জন্য দোমাবহ হইতে পারে না তাহা ব্যক্ত হইতেছে। যাগ যজ্ঞাদি কৰ্ম্ম ব্রাহ্মণত্বাদি জাত্যভিমানী পুরুষ কর্তৃক সম্পাদ্য। র্যাহার উপনয়নাদি সংস্কার না হইয়াছে কৰ্ম্মে র্তাহার অধিকার নাই। কিন্তু আত্মজ্ঞান নিরভিমান-পুরুষ-নিষ্ঠ। জাতি ও উপনয়নাদি সংস্কার শরীরেরই হয় কিন্তু আত্মা এই শরীরের সীমাবহিভূত । ‘তত্তো ভিন্নং জাত্যস্বয়সংস্কারং শরীরং” আত্মাতে জাতি নাই, বর্ণ নাই, কোন রূপ সংস্কারও নাই । সুতরাং যিনি জাত্যাদির অভিমানী আত্মজ্ঞান তাহার বহুদূরে । "নিৰ্ব্বিকারাত্মবুদ্ধিশ্চ বিদ্যেতীহ প্রকীর্তিতা।”