পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏԳԵ- হইয়া চলিয়া যাইব । সনাতনের অনুনয় বাক্যে কারাধ্যক্ষ যবন সম্মত না হওয়াতে সাত হাজার মুদ্রা দিয়া সনাতন গোপনে কারাগার হইতে নিষ্কান্ত হইলেন। রাত্রিযোগে ভাগীরথী পার হইয়া, ঈশান নামক ভূত্যকে সঙ্গে লষ্টয়া চৈতন্যের উদ্দেশে ছুটিতে লাগিলেন। গ্রাম নগরের প্রকাশ্য রাজপথ পরিত্যাগ করিয়া পাৰ্ব্বত্য বন পথে ফল মূল জল মাত্র দ্বারা কোনরূপে জীবন ধারণ করিয়া অতি ক্লেশে পাতরা পৰ্ব্বতে অগসিয়া উপনীত হইলেন । এই পৰ্ব্বতে একজন দস্থ্য ভৌমিক (ভুঞা) কুটুম্বপরিবেষ্টিত হইয়া বাস করিত। পথিক লোকের সর্বস্ব কাড়িয়া লইয়া প্রাণ বিনাশ করাই তাহার ব্যবসায় । সনাতন উক্ত ভুঞার নিকট উপস্থিত হইয়া, পৰ্ব্বত পার করিয়া দিতে অনুরোধ করিলেন । ঈশান ভূত্যের নিকট স্বর্ণমুদ্রা আছে জানিতে পারিয়া, অতি সমাদরে ভু এঃ তাহাদের আহারাদির বন্দোবস্ত করিতে লাগিল । সুতীক্ষ বুদ্ধিশালী রাজমন্ত্রী সনাতন, অপরিচিত ভোঁমিকের এবম্বিধ সমাদরের তাৎপর্য্য হৃদয়ঙ্গম করিয়া চিন্তিত হইলেন এবং ঈশানকে ভৎসনা করিয়া বলিলেন, এই কালযম কেন সঙ্গে আনিয়াছ ? অতঃপর ঈশানের নিকট হইতে স্বর্ণমুদ্রা লইয়া ভুঞাকে অর্পণ করিলেন । ভুঞা বলিল, তুমি অতি সুবুদ্ধি, এই মোহরের জন্য আজ রাত্রে আমি তোমাকে হত্যা করিতাম। যাহা হউক, ভাল হইল, আমি পাপ হইতে অব্যাহতি পাইলাম। আমি মোহর গ্রহণ করিব না, ধৰ্ম্মার্থে তোমাকে পৰ্ব্বত পার করিয়া দিব । সনাতন বলিলেন, তুমি যদি ইহা গ্রহণ না কর, তাহা হইলে, অপর কোন দস্থ্য ইহার জন্য আমার প্রাণ তত্ত্ববোধিনী পত্রিক

  • २ कश, a छ1गं

নাশ করিবে । অতঃপর, ভুঞার সাহায্যে পৰ্ব্বত অতিক্রম করিয়া কিয়দর অাসিয়া ঈশানকে বিদায় করিয়া দিলেন। সনাতন ছিন্নকস্থা করোয়া মাত্র সঙ্গে লইয়া একাকী নির্ভয় নিশ্চিন্ত মনে অতি দীন হীন বেশে চলিতে লাগিলেন । ক্রমে ছাজীপুর গ্রামের এক উদ্যানে সন্ধ্যাকালে উপস্থিত হইয়া সেইখানে রাত্রি যাপন করিতে লাগিলেন । ঈশ্বরপিপাসু দীনাত্মা সনাতন প্রেমে পুলকিত হইয়। নিস্তব্ধ গভীর রজনীতে উচ্চৈঃস্বরে হরিনাম করিতে লাগিলেন। সনাতনের ভগিনীপতি রাজকৰ্ম্মচারী শ্ৰীকান্ত, ঘোটকের মূল্যস্বরূপ বহু অর্থ লইয়া পাতসার নিকটে যাইতেছিলেন ; এই উদ্যান মধ্যে তিনিও আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছেন। রাত্রিকালে পরিচিত কণ্ঠস্বর শুনিতে পাইয়া, ব্যস্ত সমস্ত হইয়৷ সনাতনের নিকটে উপনীত হইলেন । সনাতনের ছিন্নকস্থা মলিন বসন ধূলিধূসরিত অনাহারক্লিষ্ট ক্ষীণ অঙ্গ অবলোকন করিয়া শ্ৰীকান্তের চক্ষে জল আসিল । হায় ! সনাতন, তোমার একি দশা ! তোমার রাজ্য সম্পদ কোথায় ? সুখের শরীরে এত ক্লেশ কিরূপে তুমি সহ্য করিবে ? তুমি এই কঠোর বৈরাগ্য পরিত্যাগ কর, গৃহে বসিয়া শ্ৰীহরির আরাধনা কর, তোমার এই দীনবেশ দেখিয়া আমার বুক ফাটিয়া যাইতেছে । শ্ৰীকান্তের করুণ স্নেহবাক্য শ্রবণ করিয়া সনাতন বললেন, ভাই, আমাকে আর একথা বলিও না, আমার ভাগ্যে যাহা হয় হইবে, তুমি গৃহে গমন কর । সনাতনের উৎকট বৈরাগ্যের অবস্থা চিন্তা করিয়া শ্ৰীকান্ত আর কিছু বলিতে সাহস করিলেন না। কেবল শীত নিবারণের জন্য একখানি শাল দিলেন । সনাতন হাস্য করিয়া তাহ দূরে পরিত্যাগ করি