পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাখ ১৮১২ লেন। শ্ৰী কান্ত পুনর্বার একখানি বনাত আনিয়া দিলেন। মূল্যবান জানিয়া সনাতন তাহাও গ্রহণ করিলেন না । অবশেষে শ্ৰীকান্তের অনুরোধে একখানি ভোট কম্বল শীতনিবারণের জন্য লইয়া সনাতন গোস্বামী একাকী গৌরচন্দ্রের উদ্দেশে পশ্চিমাভিমুখে গমন করিতে লাগিলেন । “তবে ভূঞা গোসাঞির সঙ্গে চারি পাইক দিল । রাত্রে রাত্রে বনপথে পৰ্ব্বত পার কৈল ॥ পার হঞা গোসাঞি তবে পুছিল ঈশানে। জানি শেষ দ্রব্য কিছু অাছে তোমা স্থানে । ঈশান কহে এক মোহর আছে অবশেষ । গোসাঞি কহে মোহর লঞা যাহ তুমি দেশ। তারে বিদায় দিয়া গোসাঞি চলিলা একেলা । হাতে করোয়া ছেঁড়া কন্থা নির্ভয় হইলা ॥ চলি চলি গোসাঞি তবে আইলা হাজিপুরে। সন্ধ্যাকালে বসিলা এক উদ্যান ভিতরে ॥ সেই হাজিপুরে রহে শ্ৰীকান্ত নাম । গোসাঞির ভগিনীপতি করে রাজকাম ॥ তিন লক্ষ মুদ্রা রাজা দিয়াছে তার সনে । ঘোড়ামূল্য লঞা পাঠায় পাতসার স্থানে ॥ টুঙ্গির উপরে বসি সেই গোসাঞিকে Wh দেখিল । রাত্রে একজন সঙ্গে গোসাঞি পাশ আইল। দুই জন মিলি তথায় ইষ্ট গোষ্ঠি কৈল । বন্ধন মোক্ষণ কথা গোসাঞি কহিল ॥ র্তিহে কহে দিন দুই রহ এইস্থানে । ভদ্রবেশ কর ছাড় মলিন বসনে ॥ গোসাঞি কহে একক্ষণ ইহা না রহিব । গঙ্গাপার করি দেহ এখনি চলিব ॥ যত্ন করি র্তিহে এক ভোট কম্বল দিল । গঙ্গাপার করি দিল গোসাঞি চলিল ॥” চৈতন্য চরিতামৃত মধ্যখণ্ড ২০ অধ্যায়। & শ্ৰীকৃষ্ণ স্মরিয়া গোসাঞি চলিল একলা । শ্রীচৈতন্য ও তাহার শিষ্যগণ ՏԳծ চলিতে চলিতে হাজীপুর গ্রামে গিয়া । রাত্রে এক বাগিচাতে রহিল পড়িয়া ॥ তার ভগ্নিপতি ঘোড়া খরিদ কারণ। আসিয়াছে সেই বাগানেতে বাসস্থান ॥ হাওয়া খান টুঙ্গির উপরে বসিয়াছে। নিকটে গোসাঞি কৃষ্ণ কৃষ্ণ ফুকারিছে। স্বর শনি মনে কিছু সন্দিগ্ধ হইয়। নামিয়া আপনি তথা গেলেন চলিয়া ॥ দেখে গিয়া বসি রাজমন্ত্রী সনাতন । চমৎকার হৈল মুখে না সরে বচন ॥ হাহাকার করিয়া অঙ্গুলি নাকে ধরি। কহয়ে খেদোক্তি করি চক্ষে বহে বারি ॥ " আহ একি দশা হেন রাজ্য পদ ছাড়ি । মলিন বসন কেন ভূমে গড়াগড়ি ৷ এহেন সুখের দেহে এতেক সুক্লেশ । কেমনে সহিবে এ দুঃখের নাহি শেষ ॥ বৈরাগ্য না কর গৃহে বসি কৃষ্ণ ভজ । আইস আইস গৃহে মলিন বস্ত্র ত্যজ ॥ সনাতন কহে ভাই ও কথা না কহ । মোর ভাগ্যে যাহা আছে তুমি ঘরে যাহ ॥ উৎকট বুঝিয়া তেঁহে পুনঃ না কহিল। শীত নিবারণ হেতু গাত্রে শাল দিল । গোসাঞি হাসিয়া তাহা দূরে তেয়াগিল । তাহা দেখি পুনঃ এক বনাত আনি দিল । উত্তম জানিয়া সাধু তাহা নাহি নিল । তবে তেঁহো মনে কিছু বিচার করিল। বুঝিয়া আশয় এক ভোট যে কম্বল । আনিয়া দিলেন তবে চক্ষে বহে জল ॥ তাহাই লইয়া অঙ্গে উঠিল গোসাঞি । চলিল পশ্চিম দিগে সঙ্গে কেহ নাই ॥” ভক্তমাল গ্রন্থ দ্বিতীয় মালা । শ্ৰীকান্ত-দত্ত ভোট কম্বল গায়ে দিয়া বৈরাগী সনাতন ভাগীরথী অতিক্রম করত অতি কষ্টে বারাণসী ধামে উপনীত হইলেন। ব্যাকুল হৃদয়ে কোথায় চৈতন্য কোথায় চৈতন্য বলিয়া উন্মত্রের ন্যায়